Skip to main content

Posts

Featured Post

প্রাথমিক কারন খুব সরল

বঙ্গবন্ধুকে ঘৃণা করার প্রাথমিক কারন খুব সরল - তিনি পাকিস্তানকে দুইভাগ করেছেন। ধর্মের ভিত্তিতে সৃষ্ট একটা দেশকে দুইভাগ করাতে পাকিস্তান প্রেমিকদের কাছে তিনিতো ঘৃণার পাত্রই হবেন। ধারনা করা হয়েছিল ১৯৪৭ সালে সৃষ্ট পাকিস্তান সৌদি আরবের সাথে মিলে ইসলামের ঝান্ডা উড়াবে। কিন্তু ১৯৫২ সালেই স্পষ্ট হয়ে যায় এ ঝান্ডা মুখ থুবড়ে পরতে যাচ্ছে; কালের আবর্তনে পরিস্কার হয়েছে পাকিস্তান ইসলামের ঝান্ডা তো উড়াতে পারেইনি বরং কলঙ্ক রুপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তানের রাজনীতিবিদদের কুটিলতা এবং পাকিস্তানি আর্মির বর্বরতা এসব পাকিস্তান প্রেমিকরা অস্বীকার করতে পারে না তাই তাদের অস্বস্তি হয় এই বিচ্ছেদে, এই বিভক্তিতে। এই পাকিস্তান প্রেমিকদের মাথায় ঢোকে না যে ইসলাম আর পাকিস্তান এক নয়, তাদের মাথায় ঢোকে না যে ইসলাম ও সৌদি আরবও এক নয়; এদের মস্তিস্কে ঢোকানো হয়েছে যে এই তিনের মিলনেই ইসলামী জোস, ঈমানি জোস তাই পাকিস্তানের যে কোন শোচনীয় পরাজয়কে তারা ইসলামের পরাজয় হিসেবে দেখে। ১৯৭১ সালের পাকিস্তানের শোচনীয় পরাজয়কেও তারা ইসলামের পরাজয় হিসেবে দেখে আর যেহেতু এইসব পাকিস্তানি প্রেমিকেরা জেনেটিক ভাবেই গোড়া, তারা বঙ্গবন্ধুকে ঘৃণা ক
Recent posts

ক্রিস্টোফার কলম্বাস - সাহসী নাবিক নাকি বেপরোয়া অ্যাডভেঞ্চারার ও বর্বর শাসক?

ক্রিস্টোফার কলম্বাসকে শুধু একজন সাহসী অ্যাডভেঞ্চারার ও সফল নাবিক হিসেবে দেখার আর উপায় নেই।  এই খ্যাতিমান নাবিকের লম্বা সাফল্যের লিস্টের তলায় চাপা পরে আছে নিরীহ ও সরল আদিবাসীদের আর্তনাদ, বলছেন কোন কোন ইতিহাসবিদ। সেই আর্তনাদের তোড়ে প্রশ্ন উঠেছে তাকে করা অতীতের মূল্যায়ন নিয়ে। তিনি কি একজন সাহসী অনুসন্ধানকারী নাবিক ছিলেন নাকি আসলে ছিলেন লোভী আক্রমণকারী? নাকি একজন বেপরোয়া অ্যাডভেঞ্চারার ও বর্বর শাসক ছিলেন তিনি? কলম্বাসের ব্যক্তিগত ডায়রি, সমুদ্র অভিযানের লগবই এবং তার সমসাময়িক নাবিকদের ডায়রি ও চিঠি সাক্ষ্য দিচ্ছে যে তিনি তার প্রথম সাগর অভিযানে বাহামা, কিউবা, হাইতি এবং ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের মধ্যে কোন এক সমুদ্রতীরে পৌঁছান এবং প্রথম দিন থেকেই স্থানীয় আদিবাসীদের মধ্যে থেকে নিজের জন্য ব্যক্তিগত চাকর বানাতে শুরু করেন।  বাহামা, কিউবা, হাইতি এবং ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে তখন বাস ছিল টাইনো আদিবাসীদের। কলম্বাস লক্ষ্য করেন এরা অলংকার পরে। তিনি ধারনা করেন এখানে সোনাদানা রয়েছে। তার দলের কিছু মানুষ রেখে তিনি স্পেনে ফিরে যান। স্পেনের রাজা-রানীকে জানান, তিনি এশিয়া পৌঁছেছেন ও চীনের একটি দ্বীপে ঘাঁটি বেধেছে

বাংলাদেশ প্যারাডক্স

'বাংলাদেশ প্যারাডক্স' নামে একটা ধাঁধা বিশ্ব অর্থনীতির বিভিন্ন বৈঠকখানায় প্রায়শই উঁকি দেয়। এসব বৈঠকখানায় নাকি বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদগণ ও সমাজবিজ্ঞানীরা কোন বিশেষ তত্ত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতি ফেলতে না পেরে বাংলাদেশ নামের পাশে প্যারাডক্স শব্দ লাগিয়ে আলোচনা এগিয়ে নেন।  হেনরি কিসিঞ্জারের সেই বহুল আলোচিত ভুল উদ্ধৃতি তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ এবং অস্টিন রবিনসনের সেই ১২৫ বছর তত্ত্বের দেশ, কিভাবে, কেন, কোন ফর্মুলায় প্রাকৃতিক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, এক দুর্ভিক্ষ, তিন সফল ও ৩০ টি ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান, রাজনৈতিক অচলাবস্থা এবং চারটি ভয়াবহ বন্যা ঠেলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এনেছে এবং চোখ ধাঁধানো অর্থনীতিক উন্নয়নের খেলা দেখাচ্ছে তা তাদের বোধগম্য হয় না।   কোন কোন অর্থনীতিবিদেরা চোখ বড় বড় করে প্রশ্ন উল্লেখ করেন যেখানে গ্রিস, সাইপ্রাস, স্পেন   ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়, বাংলাদেশ সেখানে কখনও ব্যর্থ হয়না। খরা, বন্যা, সাইক্লোন নিয়েও এদেশের মানুষ সুখী মানুষের হাসি দেয়, সাদা ভাত আর শাক দিয়ে দুইবেলে খেয়েও সুখী মানুষের ইনডেক্সে উপরের দিকে থাকে। এই অর্থনীতিক উন্নয়ন টেকসই কিনা তা নিয়ে আগের দশকে আলা

The Art of Win-win situation

  Win-win situation নিয়ে আলোচনা করার সময় ইকবাল সিদ্দিকী ভাই চে গুয়েভারার মৃত্যুর কথাটা তোলেন।  আমি একমত হই না কিন্তু দ্বিমতও পোষণ করতে পারি না।  তিনি বলেন, 'ক্যাপিটালিস্ট রেজিম তারে গুলি কইরা হত্যা করবার পর তারই ছবি টি-শার্টের সামনে এবং পিছে ছাপাইয়া কোটি কোটি পিস বিক্রি করছে ওই বিপ্লবী চেতনাধারীগো কাছেই, কামাইছে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার। পুরা বিশ্বব্যাপী। ক্যাপিটালিস্টগো কাসে চে গুয়েভারার মৃত্যু উইন উইন সিচুয়েশন। বিপ্লবীরেও খতম করসে, আবার সেই মৃত্যুরে ব্যবহার কইরা টাকা কামাইসে।  আমি মন্তব্য করলে, 'যে ক্যাপিটালিস্ট মারসে আর যে ক্যাপিটালিস্ট টি-শার্ট বিক্রি করসে তারা তো এক না,' তিনি বলেন 'শোন, তুই যেমন মনে করস কারো জন্য ভালো করলে সেই ভালোটা তোর কাছে ফেরত আসবো, সেই একই তত্ত্বে ক্যাপিটালিস্টরা জানে একদিকে কামড়াইলে অন্যদিকে ঘর ভোরবো ডলারে। কিন্তু কথা সেইটা না, কথা হইল চে গুয়েভারার মৃত্যুরে তারা একটা 'বিজনেস কেইস' হিসেবে দাঁড়া করাইতে পারসে। এবং সেটা সাকসেসফুলি।  একটা সামান্য পজ দিয়া ইকবাল সিদ্দিকী ভাই প্রশ্ন ছুইড়া দেন, যেটার সদুত্তর  উত্তর আমার কাছে নাই, 'ব

সুইডেনে শীতের শেষ আর বসন্তের শুরু ৩০ এপ্রিল

 অবশেষে শীতের খোলস থেকে বের হচ্ছে এই শহর। গাছগুলো সজাগ হচ্ছে, পাখীগুলো ফিরে আসছে।  বেশ অনেকটা আমাদের পহেলা ফাল্গুনে বসন্ত বরন করার মতো সুইডেনের মানুষরা ৩০ এপ্রিল দিনটিকে গ্রীষ্মের পূর্বাভাস হিসেবে ধরে নিয়ে উদযাপন করে। এখানে এই উদযাপন ভ্যালপুরইস ইভ -  Walpurgis Eve বা ভ্যালবর্গ - Valborg নামে প্রচলিত। আজ তাদের এট্যিটুড আমাদের  'ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত' টাইপেরই। শহরের মানুষজনের মধ্যে চনমনে ভাব চলে এসেছে। তাপমাত্রা ৩ / ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস কিন্তু অনেকে জ্যাকেট / সুয়েটার ছাড়াই বের হচ্ছে।  আমাদের থেকে তাদের বসন্ত সংক্রান্ত আর্তি অনেক প্রখর কারণ এখানে শীতের স্থায়িত্ব ছয় মাস। আমাদের দেশে বসন্ত আসে ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি আর এখানে এপ্রিলের শেষে। শীতের তীব্রতাও আমাদের দেশ থেকে এখানে কয়েকগুণ বেশী।  এরা এই দিনে ক্যাম্প ফায়ার করে, সমবেত হয়ে জোরে জোরে গান গায়, দলবল নিয়ে এলাকা / গ্রাম প্রদক্ষিণ করে, রাত জেগে ঘরের বাইরে আড্ডা দেয়, ছোট ছেলেমেয়ে হ্যালোইনের কায়দায় ট্রিক অর ট্রিট করতে বের হয়।  এমনিতে গুমোট মুখ করে থাকা সুইডিশদের চোখে মুখে আজ হাসি। ভ্যালপুরইস ইভের পর দিন রেড ডে, মানে মে দিবস উপ

Bangladesh is 50 now!

Once known for massive floods, cyclones, political violence, economic degradation, destination of foreign donation is on the way to be known as a self-sufficient country in food, a country which is efficient in disaster management and as a country that is economically vibrant. In the past 20 years, Bangladesh showed efficiency and improvement in growth of exports, literacy ratio, infrastructure development, infant and child mortality rates, poverty alleviation and women empowerment. Bangladesh in fact showed it is possible for a country to rise from extreme poverty to achieve lower middle-income status within 50 years of independence. Life expectancy, literacy rates and per capita food production have increased significantly.  Within South Asia, the country improved its position ahead the rest in a number of these indicators. Stepping ahead from self-sufficiency, Bangladesh is the fourth-largest rice producer in the world, second-largest in jute, fifth-largest in vegetable production a

সিপাহী মুন্সি আব্দুর রউফ বনাম পাকিস্তান আর্মির দ্বিতীয় কমান্ডো ব্যাটেলিয়ান

ঝকঝকে সকাল।  সিপাহী মুন্সি আব্দুর রউফ টিনের একটা মগে রঙ চা নিয়ে বসে আছে ক্যাম্পের ঠিক বাইরে। যুদ্ধের এই সময় চা খুব একটা পাওয়া যায় না। সকালের রোদে বসে চা খাওয়া মোটামুটি বিলাসিতা। স্থানীয় এক লোক গতকাল বিকালে চা পাতা দিয়ে গেছে তাই  আজকের এই আয়েশ। আটারুটি ভিজিয়ে দুধ চা খাওয়া মুন্সি আব্দুর রউফের খুব পছন্দ। অনেকদিন হলো তা খাওয়া হয় না। আজ রঙ চা পাওয়া গেছে, কম কি।     চায়ে চুমুক দিয়ে লেকের দিকে তাকায় রউফ। স্বচ্ছ, শান্ত, শীতল সবুজ পানি। লেকের মাঝে একটা বাঁশের মাথায় বসে আছে একটা পাখি। পানকৌড়ি নাকি? ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসে রউফের চাকরীর বয়স আট বছর। দেখতে দেখতে কেটে গেল! রেজিম্যান্টেড জীবন, শান্তও না, শীতলও না। গতমাস থেকে তো উত্তাল।  আটটায় ডিউটি শুরু হবে। সে নানিয়ারচর উপজেলাধীন বাকছড়ি ক্যাম্পের অধীনে আছে। খবর আছে পাকিস্তান আর্মি অগ্রসর হচ্ছে এ দিকে। আজ কালকের মধ্যেই তারা রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি নৌপথ অতিক্রম করতে চাইবে।  রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি নৌপথ স্ট্রাটেজিক দিক দিয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কারন এ পথ পাকিস্তান আর্মি কোন ভাবে অতিক্রম করতে পারলে মানিকছড়ি, মহালছড়ি আর রামগড় আয়ত্তে নিতে পারবে। তাই সেক্টর কমান্ডার

৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

 ...পাকিস্তান আর্মির ছোড়া মর্টারের গোলা থেকে স্প্লিনটারগুলো যখন ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের ডানহাঁটু ও কাঁধে বিঁধে, তখন তার বামকাঁধে আহত সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া। গোলার আঘাতে নূর মোহাম্মদ শেখ থুবড়ে সামনের দিকে পরেন। বাম হাত, বাম পা সচল। ডান হাত কিছুটা` নাড়াতে পারেন। তবে ডান পা হাতুর নীচ থেকে ঝাঁজরা হয়ে গেছে। রক্তক্ষরণ হচ্ছে হাঁটু, পাজর আর কাঁধ থেকে।  তারিখ ছিল ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১। সময় সকাল সাড়ে নয়টা। স্থান যশোর জেলার গোয়ালহাটি গ্রাম।  ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ ছিলেন গোয়ালহাটি ক্যাম্পের সবচেয়ে অভিজ্ঞ সৈনিকদের একজন। ১২ বছর হয়ে গেছে ইপিআর-এ যোগদান করেছেন। চাকরীর শুরু থেকে দিনাজপুর সীমান্তে ১১ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে বীরত্বের জন্যে 'তকমা-ই-জং' ও 'সিতারা-ই-হারব' অর্জন করেছেন। জানতেন শত্রুপক্ষকে একবিন্দু ছাড় দিলে কি হয়। তিনি সিদ্ধান্ত নেন যতক্ষণ সম্ভব আটকে রাখবেন পাকিস্তান আর্মিকে যাতে গোয়ালহাটির পাশেই সুতিপুরের মূল ঘাঁটিতে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা সুযোগ পান নিজেদের গুছিয়ে নেবার।    সেদিন নূর মোহাম্মদ ছিলেন একটা স্ট্যান্ডিং পেট্রোল টিমের নেতৃত্বে।