অবশেষে শীতের খোলস থেকে বের হচ্ছে এই শহর। গাছগুলো সজাগ হচ্ছে, পাখীগুলো ফিরে আসছে।
বেশ অনেকটা আমাদের পহেলা ফাল্গুনে বসন্ত বরন করার মতো সুইডেনের মানুষরা ৩০ এপ্রিল দিনটিকে গ্রীষ্মের পূর্বাভাস হিসেবে ধরে নিয়ে উদযাপন করে। এখানে এই উদযাপন ভ্যালপুরইস ইভ - Walpurgis Eve বা ভ্যালবর্গ - Valborg নামে প্রচলিত।
আজ তাদের এট্যিটুড আমাদের 'ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত' টাইপেরই। শহরের মানুষজনের মধ্যে চনমনে ভাব চলে এসেছে। তাপমাত্রা ৩ / ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস কিন্তু অনেকে জ্যাকেট / সুয়েটার ছাড়াই বের হচ্ছে।
আমাদের থেকে তাদের বসন্ত সংক্রান্ত আর্তি অনেক প্রখর কারণ এখানে শীতের স্থায়িত্ব ছয় মাস। আমাদের দেশে বসন্ত আসে ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি আর এখানে এপ্রিলের শেষে। শীতের তীব্রতাও আমাদের দেশ থেকে এখানে কয়েকগুণ বেশী।
এরা এই দিনে ক্যাম্প ফায়ার করে, সমবেত হয়ে জোরে জোরে গান গায়, দলবল নিয়ে এলাকা / গ্রাম প্রদক্ষিণ করে, রাত জেগে ঘরের বাইরে আড্ডা দেয়, ছোট ছেলেমেয়ে হ্যালোইনের কায়দায় ট্রিক অর ট্রিট করতে বের হয়।
এমনিতে গুমোট মুখ করে থাকা সুইডিশদের চোখে মুখে আজ হাসি। ভ্যালপুরইস ইভের পর দিন রেড ডে, মানে মে দিবস উপলক্ষে সরকারী ছুটি, তাই অনেকে মাতাল হয়, দেরীতে ঘুমাতে যায়।
অশুভ কিছুকে তাড়ানোর পন্থা মানবজাতির কাছে আদিম যুগ থেকে একটাই - আগুন। সেই পরিক্রমাতেই ইউরোপের মানুষরা একসময় জঙ্গলে আগুন জ্বালিয়ে অশুভ ও ধ্বংসাত্মক শক্তি দূর করতো। এই ঐতিহ্য অষ্টাদশ শতাব্দীতে এসে জার্মানির কোন এক অঞ্চলের চার্চের পৃষ্ঠপোষকতা পায় এবং পরবর্তীতে স্কেন্ডেভেনিয়ান এলাকায় ভ্যালপুরইস ইভ নামে জনপ্রিয় হয়।
Comments