...পাকিস্তান সরকারের কাছে ও পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর কাছে ১৯৭১ সালের যুদ্ধ, অন্য সবকিছু ছাপিয়ে, ছিল ধর্মের যুদ্ধ। তাদের কাছে এটা জিহাদ ছিল। আর এই দেশে অবস্থানকারী আলবদর ও রাজাকারদের কাছে এটা ছিল ইসলামকে সেবা করার সুযোগ। জিহাদের জন্য পাকিস্তান সরকার সেই সময় সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে অর্থও সংগ্রহ করে। পত্রিকায় দেয় বিজ্ঞাপন যেখানে যুদ্ধকে জিহাদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। প্রকৃত ইসলাম থেকে যোজন যোজন দূরে থেকে এরা ইসলামকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে।
আর এই দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছিল অন্ধকার থেকে মুক্তির জন্য, একটা বৈষম্যহীন সমাজের জন্য, ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য। বলা বাহুল্য মানবতার, ধর্মনিরপেক্ষতার জয় হয়েছিলো প্রবল ভাবে।
পাকিস্তান যে আসলে কিছু আরব দেশের প্রতিনিধিত্ব করছিলো তার প্রমান এই সব আরব দেশ গুলো দিয়েছিলো বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর স্বীকৃতি না দেবার মাধ্যমে। পাকিস্তানের বিভক্তিকে সৌদি আরব ও তার মিত্ররা দেখেছিল ইসলামের পরাজয় হিসেবে। এই জন্য সৌদি আরব বাংলাদেশকে ‘রাষ্ট্র’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ১৬ আগস্ট ১৯৭৫; বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর! এর আগে ‘ধর্ম নিরপেক্ষ’ দেশ বলে বাংলাদেশকে আখ্যায়িত করে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দুই বছর হজে যেতে বাধা দেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ।
মুসলিমলীগ ও জামায়াতে ইসলামী বাহান্নর ভাষা আন্দলনের পর থেকেই রটাচ্ছিল পাকিস্তানকে রক্ষা করতে হবে না হলে এদেশ হবে হিন্দুস্থান। রটাচ্ছিল পাকিস্তানকে রক্ষা করতে না পারলে ইসলাম ধর্ম তথা মুসলমান থাকবেনা। ১৯৭১ এ সকল গণহত্যা,ধর্ষণ,লুটতরাজকে জায়েজ করেছে ইসলামকে সেবা করার নামে। এটা অবশ্য পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পশ্চিম ভাগে অবস্থিত উচা, ফর্সা, সুঠাম দেহী মুসলমানদের মনোভাবের বর্ধিত অংশ। তখন থেকেই তারা বলতো বাঙ্গালী ঠিক ‘প্রকৃত’মুসলমান নয়, বাঙ্গালীর শারীরিক গড়ন ‘প্রকৃত’মুসলমানের নয়, এই অঞ্চলের ভাষা ‘প্রকৃত’ মুসলমানের নয়।
শারীরিক গড়ন, ভাষা আর সংস্কৃতি দিয়ে মুসলমান হবার মানদণ্ড তৈরী করা হয়েছিলো যাতে বাঙ্গালী পাস করছিলো না কোন ভাবেই। তবে মাঠে ময়দানে পাস করছিলো দুর্দান্ত ভাবে। প্রথমে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে জয়ী হলো বাঙ্গালী, পরে তো দেশটাই স্বাধীন করে ফেললো এই কালা, বাট্টু ‘অ-মুসলমান’বাঙ্গালী জাত।
১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ধর্মকে ‘মুসলিম জাতীয়তাবাদ’পোষাক পড়িয়ে ফিরিয়ে আনা হলো। সৌদিআরব ও পাকিস্তানের আশীর্বাদতুষ্ট ও সমর্থনপুষ্ট সরকার জনগণকে বুঝাতে লাগলো বাঙ্গালীয়ানা ব্যর্থ। জনগণ ‘আওয়ামী লীগের’ব্যর্থতাকে ধরে নিলো ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও বৈষম্যহীন ব্যবস্থার ব্যর্থতা হিসাবে। উলটো পথে হাটলো দেশ। ধর্ম ব্যবসায়ীরা উঠলো ক্ষমতার শেখরে, সেই ধর্মকেই ব্যবহার করে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। বাঙ্গালী একের পর এক এইসব লম্পট, হত্যাকারী, ধর্ষণকারী ধর্ম ব্যবসায়ীদের ফাসীর কাষ্ঠে তুললো একসময়।
সৌদিআরব ও পাকিস্তানের কাছে বাঙ্গালী বিব্রত হবার মতো একটি নাম। এই জাতীর নাম শুনলে বিব্রত হয় ইসলামের ঝান্ডা উড়ানোর ‘আত্মস্বীকৃত দায়িত্বপ্রাপ্ত’দেশ দুটি। কারন পদে পদে বাঙ্গালী তাদের ভুল প্রমান করেছে, পরাজিত করেছে। তাদের প্রাণের বন্ধুদের ফাসী দিয়েছে একে একে।
বাংলাদেশীদের সম্পর্কে পাকিস্তানের মনোভাব যে বদলায়নি তার প্রমান মেলে যখন জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান শাখা সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধ অপরাধী কাদের মোল্লাকে ‘শহীদ’আখ্যায়িত করে, তেহরিক-ই ইনসাফ দলের প্রধান ইমরান খান ব্যাকুল হন তার আত্মার বন্ধুর ফাসীতে এবং অন্যান্য ধর্মভিত্তিক দল পাকিস্তান সরকারকে আহবান জানায় বাংলাদেশ আক্রমণের কারন তাদের ইসলামী ভাইদের ফাসী দিয়ে দেয়া হচ্ছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান কাদের মোল্লার ফাঁসির পর এক বিবৃতিতে বলেন, “বাংলাদেশ হওয়ার আগ পর্যন্ত এক ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের একজন অকুণ্ঠ সমর্থক ছিলেন কাদের মোল্লা। তার মৃত্যুতে প্রতিটি পাকিস্তানি শোকার্ত ও মর্মাহত।”
বাংলাদেশীরা অনেক যুদ্ধে জেতে যেমন জেতে ইসলামকে ধারন করায় প্রক্রিয়ার। পাকিস্তান হারে মাঠে ময়দানে, তত্ত্বে ও পাক্কা মুসলমান হবার লড়াইয়ে। এখনো।
আর এই দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছিল অন্ধকার থেকে মুক্তির জন্য, একটা বৈষম্যহীন সমাজের জন্য, ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য। বলা বাহুল্য মানবতার, ধর্মনিরপেক্ষতার জয় হয়েছিলো প্রবল ভাবে।
পাকিস্তান যে আসলে কিছু আরব দেশের প্রতিনিধিত্ব করছিলো তার প্রমান এই সব আরব দেশ গুলো দিয়েছিলো বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর স্বীকৃতি না দেবার মাধ্যমে। পাকিস্তানের বিভক্তিকে সৌদি আরব ও তার মিত্ররা দেখেছিল ইসলামের পরাজয় হিসেবে। এই জন্য সৌদি আরব বাংলাদেশকে ‘রাষ্ট্র’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ১৬ আগস্ট ১৯৭৫; বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর! এর আগে ‘ধর্ম নিরপেক্ষ’ দেশ বলে বাংলাদেশকে আখ্যায়িত করে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দুই বছর হজে যেতে বাধা দেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ।
মুসলিমলীগ ও জামায়াতে ইসলামী বাহান্নর ভাষা আন্দলনের পর থেকেই রটাচ্ছিল পাকিস্তানকে রক্ষা করতে হবে না হলে এদেশ হবে হিন্দুস্থান। রটাচ্ছিল পাকিস্তানকে রক্ষা করতে না পারলে ইসলাম ধর্ম তথা মুসলমান থাকবেনা। ১৯৭১ এ সকল গণহত্যা,ধর্ষণ,লুটতরাজকে জায়েজ করেছে ইসলামকে সেবা করার নামে। এটা অবশ্য পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পশ্চিম ভাগে অবস্থিত উচা, ফর্সা, সুঠাম দেহী মুসলমানদের মনোভাবের বর্ধিত অংশ। তখন থেকেই তারা বলতো বাঙ্গালী ঠিক ‘প্রকৃত’মুসলমান নয়, বাঙ্গালীর শারীরিক গড়ন ‘প্রকৃত’মুসলমানের নয়, এই অঞ্চলের ভাষা ‘প্রকৃত’ মুসলমানের নয়।
শারীরিক গড়ন, ভাষা আর সংস্কৃতি দিয়ে মুসলমান হবার মানদণ্ড তৈরী করা হয়েছিলো যাতে বাঙ্গালী পাস করছিলো না কোন ভাবেই। তবে মাঠে ময়দানে পাস করছিলো দুর্দান্ত ভাবে। প্রথমে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে জয়ী হলো বাঙ্গালী, পরে তো দেশটাই স্বাধীন করে ফেললো এই কালা, বাট্টু ‘অ-মুসলমান’বাঙ্গালী জাত।
১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ধর্মকে ‘মুসলিম জাতীয়তাবাদ’পোষাক পড়িয়ে ফিরিয়ে আনা হলো। সৌদিআরব ও পাকিস্তানের আশীর্বাদতুষ্ট ও সমর্থনপুষ্ট সরকার জনগণকে বুঝাতে লাগলো বাঙ্গালীয়ানা ব্যর্থ। জনগণ ‘আওয়ামী লীগের’ব্যর্থতাকে ধরে নিলো ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও বৈষম্যহীন ব্যবস্থার ব্যর্থতা হিসাবে। উলটো পথে হাটলো দেশ। ধর্ম ব্যবসায়ীরা উঠলো ক্ষমতার শেখরে, সেই ধর্মকেই ব্যবহার করে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। বাঙ্গালী একের পর এক এইসব লম্পট, হত্যাকারী, ধর্ষণকারী ধর্ম ব্যবসায়ীদের ফাসীর কাষ্ঠে তুললো একসময়।
সৌদিআরব ও পাকিস্তানের কাছে বাঙ্গালী বিব্রত হবার মতো একটি নাম। এই জাতীর নাম শুনলে বিব্রত হয় ইসলামের ঝান্ডা উড়ানোর ‘আত্মস্বীকৃত দায়িত্বপ্রাপ্ত’দেশ দুটি। কারন পদে পদে বাঙ্গালী তাদের ভুল প্রমান করেছে, পরাজিত করেছে। তাদের প্রাণের বন্ধুদের ফাসী দিয়েছে একে একে।
বাংলাদেশীদের সম্পর্কে পাকিস্তানের মনোভাব যে বদলায়নি তার প্রমান মেলে যখন জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান শাখা সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধ অপরাধী কাদের মোল্লাকে ‘শহীদ’আখ্যায়িত করে, তেহরিক-ই ইনসাফ দলের প্রধান ইমরান খান ব্যাকুল হন তার আত্মার বন্ধুর ফাসীতে এবং অন্যান্য ধর্মভিত্তিক দল পাকিস্তান সরকারকে আহবান জানায় বাংলাদেশ আক্রমণের কারন তাদের ইসলামী ভাইদের ফাসী দিয়ে দেয়া হচ্ছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান কাদের মোল্লার ফাঁসির পর এক বিবৃতিতে বলেন, “বাংলাদেশ হওয়ার আগ পর্যন্ত এক ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের একজন অকুণ্ঠ সমর্থক ছিলেন কাদের মোল্লা। তার মৃত্যুতে প্রতিটি পাকিস্তানি শোকার্ত ও মর্মাহত।”
বাংলাদেশীরা অনেক যুদ্ধে জেতে যেমন জেতে ইসলামকে ধারন করায় প্রক্রিয়ার। পাকিস্তান হারে মাঠে ময়দানে, তত্ত্বে ও পাক্কা মুসলমান হবার লড়াইয়ে। এখনো।
Comments