খন্দকার মোশতাক - মাহাবুবুল আলম চাষী - তাহের উদ্দিন ঠাকুর ত্রয়ী ১৫ আগস্ট সকালে বাংলাদেশ রেডিও স্টুডিওতে এক সঙ্গে প্রবেশ করেন। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে এক বেলাও পার হয়নি, মৃতদেহগুলো তখনো ৩২ নম্বরের বাড়ীতে পরে আছে।
মোশতাক - চাষী- ঠাকুর ত্রয়ী রেডিও স্টুডিওতে, তিন বাহিনী প্রধানের উপস্থিতিতে, মুজিব সরকারের পতন এবং প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহনের সংবাদ ঘোষণা দেন। শুরুহয় পাকিস্তান কনফেডারেশনের দিকে এগিয়ে যাওয়া।
মোশতাক - চাষী- ঠাকুরদের স্টুডিওতে উপস্থিতি ও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহন একদম ছকে বাঁধা। এই হবার কথা ছিল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশর প্রবাসী সরকার দুটি লবিতে বিভক্ত ছিল - সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের ছত্রছায়ায় একটি লবির নেতেৃত্বে ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদিআরবের ছত্রছায়ায় অন্য লবির নেতেৃত্বে ছিলেন ধার্মিক মুসলমান খন্দকার মোশতাক আহমেদ। মে মাসে খন্দকার মোশতাক ও তার পররাষ্ট্র সচিব চাষী মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা শুরু করেন এবং ‘মুসলিম জাতীয়তাবাদ’ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে দুই পাকিস্তানকে ঐক্যবদ্ধ রাখার একটি ফর্মুলা বের করেন। ফর্মুলাটি ছিল পাকিস্তানি আর্মি সামরিক তৎপরতা বন্ধ করে ব্যারাকে ফিরে যাবে, এবং তারপর রাজনৈতিক আলোচনার সুযোগ দেবে আওয়ামী লীগকে। নিক্সন প্রশাসনের কাছে এই ফর্মুলাটি যুক্তিসঙ্গত মনে হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭১ এর মাঝামাঝি সময়ে প্রবাসী সরকারের কাছে খন্দকার মোশতাকের মার্কিন কর্তাব্যাক্তিদের সাথে গোপন বৈঠকের কথা ফাস হয়ে যায়। প্রবাসী সরকার মোশতাক - চাষী- ঠাকুর ত্রয়ীর ক্ষমতা হ্রাস করেন।
ডিসেম্বরে দেশ স্বাধীন হয়। জানুয়ারীতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভুট্টো মুজিবকে বলেন - যা হয়েছে হয়েছে; আমরা মুসলমান, আমরা ভাই ভাই; আপনি দেশে যেয়ে পাকিস্তান কনফেডারেশন করার ঘোষণা দেন। মুজিব নাচক করে দেন প্রস্তাবনা।
পাকিস্তান কনফেডারেশন সম্ভব মুজিবকে সরিয়ে দিলে, ৭১ এর পরাজয়ের প্রতিশোধ সম্ভব মুজিবকে সরিয়ে দিলে, ইসলামী ঝাণ্ডা আর আচকান টুপির প্রতিষ্ঠা সম্ভব মুজিবকে সরিয়ে দিলে। তাই ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ছকে বাঁধা যোগফল মেনে আচকান টুপি পরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহন করেন মার্কিন ও পাকিস্তান আশীর্বাদপুষ্ট দাউদকান্দির খন্দকার মোশতাক। সাথে আছে চাষী ও ঠাকুর। ভাষণে খন্দকার মোশতাক বলেন - আরব ভাইদের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি সর্বপ্রকার কলুষ থেকে দেশকে রক্ষা করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। খুনী ফারুক-রশীদ-নুর-ডালিমদের সূর্য্যসন্তান আখ্যা দিয়ে মোশতাক বক্তব্য শেষ করেন - বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভুট্টো মোশতাক সরকারকে স্বীকৃতি দেয় এবং ইসলামি সম্মেলন সংস্থার সব সদস্যদের আহ্বান জানায় স্বীকৃতি দিতে। সৌদি আরব পরেরদিন বাংলাদেশকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এক বার্তায় বাদশাহ খালেদ খোন্দকার মোশতাকের সরকারের সঙ্গে দৃঢ়তর ইসলামী সংহতি ঘোষণা দেন।
১৫ আগস্ট ছিল শুক্রবার। দুপুর বেলা খন্দকার মোশতাক আহমদ বঙ্গভবনে পৌঁছালেন; তার পতাকাবাহী গাড়ির আগে-পিছে দুটি করে চারটি ট্যাংক, তার পেছনে কয়েকটি সামরিক জিপ। রেডিও স্টেশন থেকে প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে গিয়ে খন্দকার মোশতাকের ট্যাংক সম্বলিত গাড়ীবহর বঙ্গভবনে প্রবেশ করে। তিনি জামায়েতে জুম্মার নামাজ পড়লেন বঙ্গভবনে। নামাজের পর তিন বাহিনী প্রধান, পুলিশ, বিডিআর এবং সিভিল গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে খন্দকার মোশতাক আহমেদ শপথ গ্রহণ করলেন। এরপর মোশতাক আহমেদ তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ গ্রহণ করান। সবাই আওয়ামী লীগেরই নেতা! নতুন বোতলে পুরাতন মদ।
প্রেসিডেন্ট হয়ে খন্দকার মোশতাক জয় বাংলা স্লোগান পরিবর্তন করে "বাংলাদেশ জিন্দাবাদ" স্লোগান চালু করেন; বাংলাদেশ বেতার নাম পরিবর্তন করে "রেডিও বাংলাদেশ" করেন।
১৬ই আগষ্ট, শনিবার সেনাবাহিনীর সদরদপ্তরে একটা জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ, উপ-সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ, ব্রিগেডিয়ার সি আর দত্ত, ব্রিগেডিয়ার গোলাম দস্তগীর, ব্রিগেডিয়ার মীর শওকত আলী, কর্নেল শাফায়েত জামিল, কর্নেল হুদা, কর্নেল আমজাদ হোসাইন চৌধুরী এবং কর্নেল মঈনুল হোসেন চৌধুরী। আর ছিল খুনি রশিদ ও ডালিম। ৪৬ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার কর্নেল শাফায়েত জামিল ক্ষোভের সাথে বলেন ‘এটা সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান হলে আমরা জানিনা কেন? আমি মনে করি যারা এ জঘ্ণ্য কাজ করেছে তার খুনী এবং দে শুড বি পানিসড’। ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ ও কর্নেল হুদা সাফায়েত জামিলের বক্তব্যকে সমর্থন করেন। সাফায়াত জামিল শফিউল্লাহকে বলেন ‘যেহেতু আপনি সেনাবাহিনী প্রধান, আমি আপনার আদেশ চাই। আই উইল ওয়াশ আউট অল মার্ডারারস্ উইদিন হাফ এন আওয়ার।’কিন্তু শফিউল্লাহ ও জিয়াউর রহমান নিরবতা অবলম্বন করেন। ক্ষোভের সঙ্গে তখন কর্নেল সাফায়েত জামিল শফিউল্লাহকে বলেন ‘আমার ব্রিগেড প্রস্তুত আছে। আপনি যদি আদেশ দিতে না পারেন তাহলে আপনার সেনাবাহিনীর পদ থেকে ইস্তফা দেয়া উচিত এবং আস্ক ডালিম টু সিট ইন ইয়োর চেয়ার এ্যাজ আর্মি চীফ।' জিয়াউর রহমান তখন সিগারেটে একটা দীর্ঘ টান দিয়ে এক মুখ ধোয়া ছেড়ে সাফায়েত জামিলকে বলেন, ‘লুক সাফায়েত, ইট ইজ নট এ ম্যাটার অব সেন্টিমেন্ট। এটা এখন জাতীয় সমস্যা। তুমি যদি আর্টিলারি আর আরমড সৈন্যদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ কর, দেন দেয়ার উইল বি সিভিল ওয়্যার এন্ড ইন্ডিয়ান আর্মি উইল কাম এন্ড উই উইল লুজ আওয়ার সভেরেনটি এন্ড ইন্ডিপেন্ডেন্স।’
তখন থেকেই সেনবাহিনীতে চতুর্মুখী স্রোত বইছিল; একদিকে বঙ্গভবনে বসা রশিদ, ফারুক ও ডালিম, একদিকে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, আরেক দিকে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ, আর একটু দূরে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবু তাহের এবং তার নেতৃত্বে জাসদের গোপন সৈনিক সংগঠন বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা।
১৯৭৫ এর নভেম্বরে ক্ষমতাচ্যুত হন খন্দকার মোশতাক। সামরিক সরকার তাকে গ্রেফতার করে। ততদিনে রশিদ, ফারুক ও ডালিমের হাত থেকে খালেদ মোশাররফের ও তাহেরের হাত গলে ক্ষমতা জিয়াউর রহমানের কাছে। জিয়াউর রহমানের সরকার খন্দকার মোশতাক পাঁচ বছরের জেল এবং পাচ লাখ টাকা জরিমানা করে। তবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার অপরাধে নয়, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যাবহারের অপরাধে!
তথ্য সূত্রঃ
http://www.jonmojuddho.com/mostaq-in-1971/
http://www.somewhereinblog.net/blog/kobid/29790196
http://www.banglatribune.com/national/news/131511
http://www.sachalayatan.com/55253
মোশতাক - চাষী- ঠাকুর ত্রয়ী রেডিও স্টুডিওতে, তিন বাহিনী প্রধানের উপস্থিতিতে, মুজিব সরকারের পতন এবং প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহনের সংবাদ ঘোষণা দেন। শুরুহয় পাকিস্তান কনফেডারেশনের দিকে এগিয়ে যাওয়া।
মোশতাক - চাষী- ঠাকুরদের স্টুডিওতে উপস্থিতি ও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহন একদম ছকে বাঁধা। এই হবার কথা ছিল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশর প্রবাসী সরকার দুটি লবিতে বিভক্ত ছিল - সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের ছত্রছায়ায় একটি লবির নেতেৃত্বে ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদিআরবের ছত্রছায়ায় অন্য লবির নেতেৃত্বে ছিলেন ধার্মিক মুসলমান খন্দকার মোশতাক আহমেদ। মে মাসে খন্দকার মোশতাক ও তার পররাষ্ট্র সচিব চাষী মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা শুরু করেন এবং ‘মুসলিম জাতীয়তাবাদ’ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে দুই পাকিস্তানকে ঐক্যবদ্ধ রাখার একটি ফর্মুলা বের করেন। ফর্মুলাটি ছিল পাকিস্তানি আর্মি সামরিক তৎপরতা বন্ধ করে ব্যারাকে ফিরে যাবে, এবং তারপর রাজনৈতিক আলোচনার সুযোগ দেবে আওয়ামী লীগকে। নিক্সন প্রশাসনের কাছে এই ফর্মুলাটি যুক্তিসঙ্গত মনে হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭১ এর মাঝামাঝি সময়ে প্রবাসী সরকারের কাছে খন্দকার মোশতাকের মার্কিন কর্তাব্যাক্তিদের সাথে গোপন বৈঠকের কথা ফাস হয়ে যায়। প্রবাসী সরকার মোশতাক - চাষী- ঠাকুর ত্রয়ীর ক্ষমতা হ্রাস করেন।
ডিসেম্বরে দেশ স্বাধীন হয়। জানুয়ারীতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভুট্টো মুজিবকে বলেন - যা হয়েছে হয়েছে; আমরা মুসলমান, আমরা ভাই ভাই; আপনি দেশে যেয়ে পাকিস্তান কনফেডারেশন করার ঘোষণা দেন। মুজিব নাচক করে দেন প্রস্তাবনা।
পাকিস্তান কনফেডারেশন সম্ভব মুজিবকে সরিয়ে দিলে, ৭১ এর পরাজয়ের প্রতিশোধ সম্ভব মুজিবকে সরিয়ে দিলে, ইসলামী ঝাণ্ডা আর আচকান টুপির প্রতিষ্ঠা সম্ভব মুজিবকে সরিয়ে দিলে। তাই ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ছকে বাঁধা যোগফল মেনে আচকান টুপি পরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহন করেন মার্কিন ও পাকিস্তান আশীর্বাদপুষ্ট দাউদকান্দির খন্দকার মোশতাক। সাথে আছে চাষী ও ঠাকুর। ভাষণে খন্দকার মোশতাক বলেন - আরব ভাইদের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি সর্বপ্রকার কলুষ থেকে দেশকে রক্ষা করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। খুনী ফারুক-রশীদ-নুর-ডালিমদের সূর্য্যসন্তান আখ্যা দিয়ে মোশতাক বক্তব্য শেষ করেন - বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভুট্টো মোশতাক সরকারকে স্বীকৃতি দেয় এবং ইসলামি সম্মেলন সংস্থার সব সদস্যদের আহ্বান জানায় স্বীকৃতি দিতে। সৌদি আরব পরেরদিন বাংলাদেশকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এক বার্তায় বাদশাহ খালেদ খোন্দকার মোশতাকের সরকারের সঙ্গে দৃঢ়তর ইসলামী সংহতি ঘোষণা দেন।
১৫ আগস্ট ছিল শুক্রবার। দুপুর বেলা খন্দকার মোশতাক আহমদ বঙ্গভবনে পৌঁছালেন; তার পতাকাবাহী গাড়ির আগে-পিছে দুটি করে চারটি ট্যাংক, তার পেছনে কয়েকটি সামরিক জিপ। রেডিও স্টেশন থেকে প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে গিয়ে খন্দকার মোশতাকের ট্যাংক সম্বলিত গাড়ীবহর বঙ্গভবনে প্রবেশ করে। তিনি জামায়েতে জুম্মার নামাজ পড়লেন বঙ্গভবনে। নামাজের পর তিন বাহিনী প্রধান, পুলিশ, বিডিআর এবং সিভিল গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে খন্দকার মোশতাক আহমেদ শপথ গ্রহণ করলেন। এরপর মোশতাক আহমেদ তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ গ্রহণ করান। সবাই আওয়ামী লীগেরই নেতা! নতুন বোতলে পুরাতন মদ।
প্রেসিডেন্ট হয়ে খন্দকার মোশতাক জয় বাংলা স্লোগান পরিবর্তন করে "বাংলাদেশ জিন্দাবাদ" স্লোগান চালু করেন; বাংলাদেশ বেতার নাম পরিবর্তন করে "রেডিও বাংলাদেশ" করেন।
১৬ই আগষ্ট, শনিবার সেনাবাহিনীর সদরদপ্তরে একটা জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ, উপ-সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ, ব্রিগেডিয়ার সি আর দত্ত, ব্রিগেডিয়ার গোলাম দস্তগীর, ব্রিগেডিয়ার মীর শওকত আলী, কর্নেল শাফায়েত জামিল, কর্নেল হুদা, কর্নেল আমজাদ হোসাইন চৌধুরী এবং কর্নেল মঈনুল হোসেন চৌধুরী। আর ছিল খুনি রশিদ ও ডালিম। ৪৬ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার কর্নেল শাফায়েত জামিল ক্ষোভের সাথে বলেন ‘এটা সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান হলে আমরা জানিনা কেন? আমি মনে করি যারা এ জঘ্ণ্য কাজ করেছে তার খুনী এবং দে শুড বি পানিসড’। ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ ও কর্নেল হুদা সাফায়েত জামিলের বক্তব্যকে সমর্থন করেন। সাফায়াত জামিল শফিউল্লাহকে বলেন ‘যেহেতু আপনি সেনাবাহিনী প্রধান, আমি আপনার আদেশ চাই। আই উইল ওয়াশ আউট অল মার্ডারারস্ উইদিন হাফ এন আওয়ার।’কিন্তু শফিউল্লাহ ও জিয়াউর রহমান নিরবতা অবলম্বন করেন। ক্ষোভের সঙ্গে তখন কর্নেল সাফায়েত জামিল শফিউল্লাহকে বলেন ‘আমার ব্রিগেড প্রস্তুত আছে। আপনি যদি আদেশ দিতে না পারেন তাহলে আপনার সেনাবাহিনীর পদ থেকে ইস্তফা দেয়া উচিত এবং আস্ক ডালিম টু সিট ইন ইয়োর চেয়ার এ্যাজ আর্মি চীফ।' জিয়াউর রহমান তখন সিগারেটে একটা দীর্ঘ টান দিয়ে এক মুখ ধোয়া ছেড়ে সাফায়েত জামিলকে বলেন, ‘লুক সাফায়েত, ইট ইজ নট এ ম্যাটার অব সেন্টিমেন্ট। এটা এখন জাতীয় সমস্যা। তুমি যদি আর্টিলারি আর আরমড সৈন্যদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ কর, দেন দেয়ার উইল বি সিভিল ওয়্যার এন্ড ইন্ডিয়ান আর্মি উইল কাম এন্ড উই উইল লুজ আওয়ার সভেরেনটি এন্ড ইন্ডিপেন্ডেন্স।’
তখন থেকেই সেনবাহিনীতে চতুর্মুখী স্রোত বইছিল; একদিকে বঙ্গভবনে বসা রশিদ, ফারুক ও ডালিম, একদিকে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, আরেক দিকে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ, আর একটু দূরে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবু তাহের এবং তার নেতৃত্বে জাসদের গোপন সৈনিক সংগঠন বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা।
১৯৭৫ এর নভেম্বরে ক্ষমতাচ্যুত হন খন্দকার মোশতাক। সামরিক সরকার তাকে গ্রেফতার করে। ততদিনে রশিদ, ফারুক ও ডালিমের হাত থেকে খালেদ মোশাররফের ও তাহেরের হাত গলে ক্ষমতা জিয়াউর রহমানের কাছে। জিয়াউর রহমানের সরকার খন্দকার মোশতাক পাঁচ বছরের জেল এবং পাচ লাখ টাকা জরিমানা করে। তবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার অপরাধে নয়, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যাবহারের অপরাধে!
তথ্য সূত্রঃ
http://www.jonmojuddho.com/mostaq-in-1971/
http://www.somewhereinblog.net/blog/kobid/29790196
http://www.banglatribune.com/national/news/131511
http://www.sachalayatan.com/55253
Comments