প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন ১৮৬৩ সালে পেনসিলভেনিয়ার গেটিসবার্গে একটি যুদ্ধক্ষেত্রের উপর দাঁড়িয়ে আমেরিকার গৃহযুদ্ধ, দাস প্রথা ও মানুষের সমঅধিকার নিয়ে বক্তব্য দেবার সময় গণতান্ত্রিক সরকারের একটি ছোট সংজ্ঞা দেন যা শুনে উপস্থিত সবাই অভিভূত হয়ে পড়েছিল।
তার দেয়া ছোট্ট সংজ্ঞাটি কালোত্তীর্ণ কারণ ১৮৬৩ থেকে আজ অব্দি গণতান্ত্রিক সরকার সংক্রান্ত সব আলাপেই এটি উঠে আসে অনিবার্য ভাবে।
গণতন্ত্র একটি জটিল বিষয় এবং কুটিল পদ্ধতি যাকে ধারন করতে ব্যর্থ হয়েছে বহু জাতি ও বহু তাত্ত্বিক। কিন্তু আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন একটি বাক্যে দারুণভাবে একে ব্যাখ্যা করেন সেই দিন। সন্দেহ নেই লিংকন ছিলেন অত্যন্ত ভাল বক্তা, একজন বোদ্ধা এবং একজন যোদ্ধা কিন্তু গণতন্ত্র নিয়ে তার বক্তব্যটি খুব সম্ভবত স্পন্টেনিয়াস ছিল।
গেটিসবার্গের যুদ্ধে মারা গিয়েছিল ৮ হাজারের মতো সৈনিক। যুদ্ধক্ষেত্রের একটি অংশেই নিহতদের কবর দেয়া হয়েছিল। সেই কবরস্থানে নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে বানানো স্মৃতিসৌধের পাশে দাঁড়িয়ে লিংকন কথাগুলো বলেন - গণতন্ত্র হলো জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা সরকার, জনগণের জন্য সরকার।
তিনটি অংশের প্রথমটি -জনগণের সরকার, ও তৃতীয়টি -জনগণের জন্য সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেখা যায় অহরহ কিন্তু দ্বিতীয় অংশ -জনগণের দ্বারা সরকার, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত। রাষ্ট্রব্যবস্থায় যেসব মানুষ খুঁটি হিসেবে অবস্থান নিয়ে থাকেন তারা সেসব দেশের নাগরিক বটে তবে ঠিক জনগণের অংশ নন। এরা সব সময়ই এলিট শ্রেণী। জনগণের মধ্যে থেকে যে স্বল্প পরিমাণ নেতা এই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত হন তারা অল্প সময়েই ঐ এলিট শ্রেণীতে ঢুকে পড়েন, জনগণের থেকে ছিন্ন হন।
এই এলিট গ্রুপের আকাঙ্খা ও চাহিদা জনগণ থেকে সম্পূর্ণ রূপে ভিন্ন। হাতীর যেমন দুই দাঁত - একটি দেখানোর এবং একটি খাবার জন্য, তেমন এলিট শ্রেণীর খাবার দাঁত অদৃশ্য থাকে। জনগণকে যেটা দেখিয়ে শান্ত রাখা হয় এটা 'জনগণের দ্বারা সরকার' সেটা হাতীর বাইরের দাঁত। জনগণ বাইরের দাঁত দেখতেই অভ্যস্ত এবং এটা দেখতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। যখন জনগণ খাবার দাঁত দেখার স্পৃহা অর্জন করে তখনই গণ-আন্দোলন হয়।
আন্দোলনের পর যদি জনগণের মধ্যে থেকে কেউ সরকারে বসে দ্বিতীয় অংশটি 'জনগণের দ্বারা সরকার' পূরণ করেও, খুব অল্প সময়েই তারা সেই এলিটে রূপান্তরিত হয়।
আব্রাহাম লিংকন এক বাক্যে সংজ্ঞা দিয়েছিলেন গণতান্ত্রিক সরকারের কিন্তু তার বক্তব্যে আরও বলেছিলেন কিরকম সমাজব্যবস্থা কাম্য গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা সফল করার জন্য। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল রণধ্বনি ছিল সব মানুষ সমান। লিংকন এই 'সব মানুষ সমান' এর উপর বেশি জোর দিয়েছিলেন কিন্তু ১৮৬৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় 'সব মানুষ সমান' নিশ্চিত করা যায়নি। এটা নিশ্চিত করা যাবেনা জানতেন আব্রাহাম লিংকনও কারণ বক্তব্যটি দেবার সময় তিনি সেই এলিট গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত একজনই ছিলেন।
আর জনগণের কথা তিনি বলেছেন ঠিক আছে কিন্তু কোন জনগণ! জনগন তো শ্রেণীতে শ্রেণীতে বিভক্ত, বর্ণে বর্ণে বিভক্ত, আদর্শগত ভাবে বিভক্ত, ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে বিভক্ত। এ জন্য গণতান্ত্রিক সরকার অন্ধের হাতী দেখার মতন, যে শুর ধরে তার কাছে এক রকম, যে পা ধরে তার কাছে একরকম, যে ল্যাজ ধরে তার কাছে একরকম। তবে বেশীরভাগ জনগন হাতীর পশ্চাৎদেশ ধরে গণতান্ত্রিক সরকারের মানে বুঝবার চেষ্টা করে।
তার দেয়া ছোট্ট সংজ্ঞাটি কালোত্তীর্ণ কারণ ১৮৬৩ থেকে আজ অব্দি গণতান্ত্রিক সরকার সংক্রান্ত সব আলাপেই এটি উঠে আসে অনিবার্য ভাবে।
গণতন্ত্র একটি জটিল বিষয় এবং কুটিল পদ্ধতি যাকে ধারন করতে ব্যর্থ হয়েছে বহু জাতি ও বহু তাত্ত্বিক। কিন্তু আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন একটি বাক্যে দারুণভাবে একে ব্যাখ্যা করেন সেই দিন। সন্দেহ নেই লিংকন ছিলেন অত্যন্ত ভাল বক্তা, একজন বোদ্ধা এবং একজন যোদ্ধা কিন্তু গণতন্ত্র নিয়ে তার বক্তব্যটি খুব সম্ভবত স্পন্টেনিয়াস ছিল।
গেটিসবার্গের যুদ্ধে মারা গিয়েছিল ৮ হাজারের মতো সৈনিক। যুদ্ধক্ষেত্রের একটি অংশেই নিহতদের কবর দেয়া হয়েছিল। সেই কবরস্থানে নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে বানানো স্মৃতিসৌধের পাশে দাঁড়িয়ে লিংকন কথাগুলো বলেন - গণতন্ত্র হলো জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা সরকার, জনগণের জন্য সরকার।
তিনটি অংশের প্রথমটি -জনগণের সরকার, ও তৃতীয়টি -জনগণের জন্য সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেখা যায় অহরহ কিন্তু দ্বিতীয় অংশ -জনগণের দ্বারা সরকার, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত। রাষ্ট্রব্যবস্থায় যেসব মানুষ খুঁটি হিসেবে অবস্থান নিয়ে থাকেন তারা সেসব দেশের নাগরিক বটে তবে ঠিক জনগণের অংশ নন। এরা সব সময়ই এলিট শ্রেণী। জনগণের মধ্যে থেকে যে স্বল্প পরিমাণ নেতা এই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত হন তারা অল্প সময়েই ঐ এলিট শ্রেণীতে ঢুকে পড়েন, জনগণের থেকে ছিন্ন হন।
এই এলিট গ্রুপের আকাঙ্খা ও চাহিদা জনগণ থেকে সম্পূর্ণ রূপে ভিন্ন। হাতীর যেমন দুই দাঁত - একটি দেখানোর এবং একটি খাবার জন্য, তেমন এলিট শ্রেণীর খাবার দাঁত অদৃশ্য থাকে। জনগণকে যেটা দেখিয়ে শান্ত রাখা হয় এটা 'জনগণের দ্বারা সরকার' সেটা হাতীর বাইরের দাঁত। জনগণ বাইরের দাঁত দেখতেই অভ্যস্ত এবং এটা দেখতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। যখন জনগণ খাবার দাঁত দেখার স্পৃহা অর্জন করে তখনই গণ-আন্দোলন হয়।
আন্দোলনের পর যদি জনগণের মধ্যে থেকে কেউ সরকারে বসে দ্বিতীয় অংশটি 'জনগণের দ্বারা সরকার' পূরণ করেও, খুব অল্প সময়েই তারা সেই এলিটে রূপান্তরিত হয়।
আব্রাহাম লিংকন এক বাক্যে সংজ্ঞা দিয়েছিলেন গণতান্ত্রিক সরকারের কিন্তু তার বক্তব্যে আরও বলেছিলেন কিরকম সমাজব্যবস্থা কাম্য গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা সফল করার জন্য। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল রণধ্বনি ছিল সব মানুষ সমান। লিংকন এই 'সব মানুষ সমান' এর উপর বেশি জোর দিয়েছিলেন কিন্তু ১৮৬৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় 'সব মানুষ সমান' নিশ্চিত করা যায়নি। এটা নিশ্চিত করা যাবেনা জানতেন আব্রাহাম লিংকনও কারণ বক্তব্যটি দেবার সময় তিনি সেই এলিট গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত একজনই ছিলেন।
আর জনগণের কথা তিনি বলেছেন ঠিক আছে কিন্তু কোন জনগণ! জনগন তো শ্রেণীতে শ্রেণীতে বিভক্ত, বর্ণে বর্ণে বিভক্ত, আদর্শগত ভাবে বিভক্ত, ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে বিভক্ত। এ জন্য গণতান্ত্রিক সরকার অন্ধের হাতী দেখার মতন, যে শুর ধরে তার কাছে এক রকম, যে পা ধরে তার কাছে একরকম, যে ল্যাজ ধরে তার কাছে একরকম। তবে বেশীরভাগ জনগন হাতীর পশ্চাৎদেশ ধরে গণতান্ত্রিক সরকারের মানে বুঝবার চেষ্টা করে।
Comments