প্রধানমন্ত্রীর ছেলের টাকার জন্য ব্যাংক ডাকাতির প্রয়োজন হয় না এবং ব্যাংক ডাকাতি করবার অভিপ্রায় থাকলে কেউ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে হানা দেয় না কিন্তু গুজব হিসেবে এটা বেশ মুখরোচক যে বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ কামাল ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা করেছেন। আর যুদ্ধ পরবর্তী দেশে নানা অনিয়ম, আনাচার, অন্যায়ের পিঠে চড়ে যখন এমন গুজব ছড়ায় তখন এর মাত্রা বেগ পায় বিদ্যুতের।
বাংলাদেশের প্রথম বিরোধীদল জাসদ আর বাংলাদেশের প্রথম গেরিলা দল সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টি। স্বাধীনতার কিছুদিন পর থেকেই এরা সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, দুই দলের কাছেই ছিল অস্ত্র, দুই দলের মধ্যে ছিল মুজিব ঘৃণার বীজ। হত্যা, ডাকাতি আর অস্ত্রের ঝনঝনানি দিয়ে অস্তিত্ব জানান দিচ্ছিল সর্বহারা পার্টি আর জাসদের আস্ত্রধারীরা সন্ধ্যার পর ঢাকার অলিগলিতে খুন, রাহাজানি, অপহরণের মাধ্যমে সরকারকে অচল করার প্রয়াস চালাচ্ছিল। জাসদ আবার 'গণকণ্ঠ' নামে তাদের মালিকানায় প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি, আওয়ামী লীগের রাজনীতির বিরুদ্ধচারন করতো। এখন অবশ্য তা বুঝবার উপায় নেই যে সেইসময় জাসদ ছিল আওয়ামী লীগের একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। আওয়ামী লীগের বিচিত্র রাজনৈতিক সমীকরণে সেই জাসদের নেতারা এখন সরকারের অংশ।
সময়টা তখন ১৯৭৩।
সেই সময় পুলিশ কর্মকর্তা এসপি মাহবুব উদ্দিন আহমদ ঢাকায় কয়েকটি দল পরিচালনা করতেন জাসদের গণবাহিনী এবং সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টি দমন করার জন্য। দলগুলো সাদা পোশাকে কিন্তু সশস্ত্র অবস্থায় প্রাইভেট গাড়ীতে ঘুরত গণবাহিনী ও নকশালীদের ধরার জন্য এবং সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই চ্যালেঞ্জ করত। এসপি মাহবুবের টিমগুলোর পরিচিতি হতো টিম লিডারের নামানুসারে যার একটির নাম ছিল 'কিবরিয়া বাহিনী'। ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ রাতে কাকরাইল, পল্টন ও মতিঝিল এলাকার টহলের দায়িত্বে ছিল কিবরিয়া বাহিনী। শেখ কামাল সে রাতে তার বন্ধুদের নিয়ে বেড়িয়েছেন যার মধ্যে ছিলেন পরবর্তীতে বিএনপি নেতা ইকবাল হাছান টুকু এবং জাতীয় পার্টি নেতা কাজী ফিরোজ রশিদ। তারা সশস্ত্র ছিলেন। শেখ কামাল ও তার বন্ধুরা কাকরাইল মোড় পার হবার সময় একটি প্রাইভেট কারে কয়েকজন সশস্ত্র লোককে দেখতে পেলেন, তারা মনে করলেন প্রাইভেট কারে থাকতে পারে গণবাহিনীর অথবা সর্বহারা পার্টির সদস্য। কিন্তু গাড়ীটিতে আসলে ছিল কিবরিয়া বাহিনীর সদস্যরা। কাকরাইল মোড় পার হয়ে শেখ কামালদের গাড়ী যখন নাইটিঙ্গেল রেস্তোরাঁ অতিক্রম করছিল তখন তারা ঠিক করলেন চ্যালেঞ্জ করবেন প্রাইভেট কারের আরোহীদের। প্রাইভেট কারটি ততক্ষণে একটা গলিতে ঢুকেছে। শেখ কামালদের গাড়ী তাদের অনুসরণ করে গলিতে ঢুকতেই পুলিশ সদস্যরা গাড়ি থেকে নেমে গুলি ছুড়তে লাগলেন। জখম হলেন গাড়ীতে শেখ কামাল ও অন্যান্যরা; শুধু ইকবাল হাছান টুকু অক্ষত থাকলেন। পুলিশই তখন তাদের পিজি হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত ৩টার দিকে ইকবাল হাছান টুকু ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বরে ঢুকে শেখ জামালকে খবরটি দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ কামালের এরকম অবাঞ্ছিত ঘোরাফেরায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন এবং হাসপাতালে দেখতে যেতে প্রথমে অস্বীকৃতি জানান।
স্বাধীনতাবিরোধী ও আওয়ামী লীগ বিদ্বেষীরা এই ঘটনাকে সারা দেশে ছড়ায় ‘ব্যাংক ডাকাতি’ করতে গিয়ে কামাল পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে। তবে সে সময় যতটুকু ছড়ানো হয়েছিল তার থেকে অনেক বেশী ছড়ানো হয়েছে ১৯৭৫ সালে তার হত্যার পর। ২১ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় শেখ কামালকে ব্যাংক ডাকাত বানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রথম বিরোধীদল জাসদ আর বাংলাদেশের প্রথম গেরিলা দল সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টি। স্বাধীনতার কিছুদিন পর থেকেই এরা সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, দুই দলের কাছেই ছিল অস্ত্র, দুই দলের মধ্যে ছিল মুজিব ঘৃণার বীজ। হত্যা, ডাকাতি আর অস্ত্রের ঝনঝনানি দিয়ে অস্তিত্ব জানান দিচ্ছিল সর্বহারা পার্টি আর জাসদের আস্ত্রধারীরা সন্ধ্যার পর ঢাকার অলিগলিতে খুন, রাহাজানি, অপহরণের মাধ্যমে সরকারকে অচল করার প্রয়াস চালাচ্ছিল। জাসদ আবার 'গণকণ্ঠ' নামে তাদের মালিকানায় প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি, আওয়ামী লীগের রাজনীতির বিরুদ্ধচারন করতো। এখন অবশ্য তা বুঝবার উপায় নেই যে সেইসময় জাসদ ছিল আওয়ামী লীগের একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। আওয়ামী লীগের বিচিত্র রাজনৈতিক সমীকরণে সেই জাসদের নেতারা এখন সরকারের অংশ।
সময়টা তখন ১৯৭৩।
সেই সময় পুলিশ কর্মকর্তা এসপি মাহবুব উদ্দিন আহমদ ঢাকায় কয়েকটি দল পরিচালনা করতেন জাসদের গণবাহিনী এবং সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টি দমন করার জন্য। দলগুলো সাদা পোশাকে কিন্তু সশস্ত্র অবস্থায় প্রাইভেট গাড়ীতে ঘুরত গণবাহিনী ও নকশালীদের ধরার জন্য এবং সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই চ্যালেঞ্জ করত। এসপি মাহবুবের টিমগুলোর পরিচিতি হতো টিম লিডারের নামানুসারে যার একটির নাম ছিল 'কিবরিয়া বাহিনী'। ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ রাতে কাকরাইল, পল্টন ও মতিঝিল এলাকার টহলের দায়িত্বে ছিল কিবরিয়া বাহিনী। শেখ কামাল সে রাতে তার বন্ধুদের নিয়ে বেড়িয়েছেন যার মধ্যে ছিলেন পরবর্তীতে বিএনপি নেতা ইকবাল হাছান টুকু এবং জাতীয় পার্টি নেতা কাজী ফিরোজ রশিদ। তারা সশস্ত্র ছিলেন। শেখ কামাল ও তার বন্ধুরা কাকরাইল মোড় পার হবার সময় একটি প্রাইভেট কারে কয়েকজন সশস্ত্র লোককে দেখতে পেলেন, তারা মনে করলেন প্রাইভেট কারে থাকতে পারে গণবাহিনীর অথবা সর্বহারা পার্টির সদস্য। কিন্তু গাড়ীটিতে আসলে ছিল কিবরিয়া বাহিনীর সদস্যরা। কাকরাইল মোড় পার হয়ে শেখ কামালদের গাড়ী যখন নাইটিঙ্গেল রেস্তোরাঁ অতিক্রম করছিল তখন তারা ঠিক করলেন চ্যালেঞ্জ করবেন প্রাইভেট কারের আরোহীদের। প্রাইভেট কারটি ততক্ষণে একটা গলিতে ঢুকেছে। শেখ কামালদের গাড়ী তাদের অনুসরণ করে গলিতে ঢুকতেই পুলিশ সদস্যরা গাড়ি থেকে নেমে গুলি ছুড়তে লাগলেন। জখম হলেন গাড়ীতে শেখ কামাল ও অন্যান্যরা; শুধু ইকবাল হাছান টুকু অক্ষত থাকলেন। পুলিশই তখন তাদের পিজি হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত ৩টার দিকে ইকবাল হাছান টুকু ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বরে ঢুকে শেখ জামালকে খবরটি দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ কামালের এরকম অবাঞ্ছিত ঘোরাফেরায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন এবং হাসপাতালে দেখতে যেতে প্রথমে অস্বীকৃতি জানান।
স্বাধীনতাবিরোধী ও আওয়ামী লীগ বিদ্বেষীরা এই ঘটনাকে সারা দেশে ছড়ায় ‘ব্যাংক ডাকাতি’ করতে গিয়ে কামাল পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে। তবে সে সময় যতটুকু ছড়ানো হয়েছিল তার থেকে অনেক বেশী ছড়ানো হয়েছে ১৯৭৫ সালে তার হত্যার পর। ২১ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় শেখ কামালকে ব্যাংক ডাকাত বানানো হয়েছে।
Comments