ক্যাপ্টেন চার্লস উফাম একমাত্র ব্যক্তি যাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ‘দ্য ভিক্টোরিয়া ক্রস’ পুরস্কারে দুইবার ভূষিত করা হয়েছিল। এই পুরস্কার অসীম সাহসিকতার জন্য ব্রিটিশ ও কমনওয়েলথ সেনাবাহিনীর সদস্যদের দেওয়া হতো।
১৯৪১ সালের ৩০ মে জার্মান আগ্রাসনের সময় সাহসিকতা প্রদর্শন করে তিনি তার প্রথম ভিক্টোরিয়া ক্রস অর্জন করেন। তার অবস্থান ছিল গ্রীসের ক্রিতে দ্বীপে। সুসজ্জিত জার্মান বাহিনী এগিয়ে আসছে। ক্যাপ্টেন চার্লস উফামের দল অস্ত্রশস্ত্র ও জনবলে দুর্বল। এই অবস্থায় সুসজ্জিত জার্মান শিবিরে তিনি তার প্লাটুন নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালান। এই আক্রমণের সময় তিনি একা দুটি মেশিনগান নেট ধ্বংস করেন এবং গ্রেনেড দিয়ে একটি এন্টি এয়ারক্রাফট গান ধ্বংস করেন। এরপর তার মেশিনগান দিয়ে জার্মানির ২২জন সৈন্যকে হত্যা করেন। ফেরত আসার সময় তার প্লাটুনেরএকজন আহত সৈনিককে উদ্ধার করে নিরাপদে নিয়ে আসেন ।
ক্যাপ্টেন চার্লস উফাম দ্বিতীয় ভিক্টোরিয়া ক্রসটি তিনি পান পরের বছর ২৫ জুলাই, প্রথম এল আলামেইন যুদ্ধের সময়। রুইসাত রেইজ প্রতিরক্ষার সময় তিনি গোলাগুলির মধ্যে সামনে এগিয়ে যান জার্মান সৈন্যভর্তি একটি ট্রাকে গ্রেনেড ছুড়ে মারার জন্য। ঠিক লক্ষে গ্রেনেড মারেন,তছনছ করে দেন অগ্রসরমান জার্মান বাহিনীর আক্রমণ। এরপর শত্রুপক্ষের লাইনে ঢুকে পড়ে চার্লস উফাম মেশিনগান দিয়ে হত্যা করেন বেশ কয়জন জার্মান সৈন্য। এরপর যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বেরিয়ে আসেন। তার শরীরে তখন দুইটি গুলি।
সেই বছরেই পরবর্তী এক অপারেশনের সময় চার্লস উফাম ধরা পরেন জার্মান বাহিনীর হাতে। অমানুষিক টর্চার করে জার্মান সৈন্যরা। জেনারেল রোমেল আদেশ দেন চার্লস উফামকে জানে মেরে ফেলার আগে তিনি তাকে দেখতে চান। সেদিন রাতেই টর্চার সেল থেকে পালিয়ে যান অর্ধমৃত উফাম। পরে আবার যোগ দেন যুদ্ধে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে ক্যাপ্টেন চার্লস উফাম নিজদেশ নিউজিল্যান্ডে ফিরে আসেন। এলাকার ধনীরা তাকে দশ হাজার পাউন্ড দেন একটা ফার্মহাউস কিনে বসবাস করার জন্য। চার্লস উফাম পুরো টাকা দিয়ে দেন নিউজিল্যান্ড আর্মির সন্তানদের উচ্চশিক্ষার জন্য।
কিছু বছর পর ‘যুদ্ধ পুনর্বাসন ঋণ’ নিয়ে ছোট একটি ফার্মহাউস কিনে নেন। বনে যান পুরাদস্তুর চাষী।
নিজ দেশে তাকে ডাকা হয় ‘ক্যাপ্টেন নিউজিল্যান্ড’ বলে।
Comments