Add caption |
…সমুদ্রের গর্জন,
পাহাড়ের গাম্ভীর্য,
নদীর প্রবাহমানতা
আর অরণ্যের
মায়াবী নিঝুমতার
কারনে ইংরেজরা
চিটাগাং এর নাম দিয়েছিলো প্রাচ্যের রানী। বাংলাদেশের
আর
কোন শহরের এতো নাম নেই
যা চিটাগাং
এর আছে।
চট্টলা, চাটগাঁ ও চট্রগ্রাম ছাড়াও
এই শহর
পরিচিত চাটিগ্রাম,
চর্তুগ্রাম, সোদকাওয়াঙ, চিতাগঞ্জ, রোসাং
জেটিগাঁ ও
দেবগাঁও নামে।
শ্রী পূর্ণচন্দ্র দেব
বর্মার মতে
পর্তুগীজদের দেয়াং পাহাড়ের আড্ডায় জ্বালানো
সারিবদ্ধ চাটিসমূহ
গভীর সাগর
থেকে দেখা
যেত।
সেই সারি
সারি চাটি
থেকে চাটি
গ্রাম এবং
ক্রমে চট্টগ্রাম
নামে রুপান্তর হয়েছে।
১৬৬৬ খ্রিষ্টাব্দে
মুগল সম্রাট
আওরঙ্গজেব আরাকানদের হটিয়ে এই অঞ্চল
দখল করেন
এবং এর
নাম রাখেন
“ইসলামাবাদ”। ব্রিটিশরা ১৭৬০ সালে
সাম্প্রদায়িক মন মানসিকতায় ইসলামাবাদ নামকে
বাতিল করে
ইংরেজী নাম
চিটাগাং প্রচলিত
করে।
পরিব্রাজক ইবনে বতুতা
চিটাগাং আসেন ১৩৪৬ সালে।
তার লেখায়
পাওয়া যায় “যে শহরে আমরা
প্রবেশ করলাম
তা হল
সোদকাওয়াঙ। এটি মহাসমূদ্রের তীরে
অবস্থিত একটি
বিরাট শহর,
এরই কাছে
গঙ্গা নদী-
যেখানে হিন্দুরা
তীর্থ করেন
এবং যমুনা
নদী একসঙ্গে
মিলেছে এবং
সেখান থেকে
প্রবাহিত হয়ে
তারা সমুদ্রে
পড়েছে।
গঙ্গা নদীর
তীরে অসংখ্য
জাহাজ আছে,
সেইগুলি দিয়ে
তারা লখনৌতির
লোকেদের সঙ্গে
যুদ্ধ করে। ” চীনা পরিব্রাজক ফেই-শিন এখানে
এসেছিলেন ১৪৩৬
সালে।
তিনি লিখেছেন "বাতাস
অনুকুল থাকলে
সুমাত্রা থেকে
এই দেশে
কুড়ি দিনে
পৌঁছানো যায়। এ
দেশ চীনের
পশ্চিমে অবস্থিত।এই
দেশটির উপসাগরের
কূলে একটি
সামুদ্রিক বন্দর আছে তার নাম
চা-টি-কিয়াং।
রাজা যখন
শুনলেন আমাদের
জাহাজ সেখানে
পৌছেছে, তিনি
পতাকা ও
অন্যান্য উপহার
সমেত উচ্চ
পদস্থ রাজকর্মচারীদের
সেখানে পাঠালেন। হাজারেরও
বেশি ঘোড়া
ও মানুষ
বন্দরে এসে
হাজির হল।"
চিটাগাং এর অর্থনীতি
মূলত বাণিজ্য
নির্ভর।
বন্দর নগরী
হিসাবে ব্রিটিশ-পূর্ব সময়ে
, ব্রিটিশ আমলে এবং পাকিস্তান আমলেও
চিটাগাং বাণিজ্যিক
ক্ষেত্রে দেশের
অন্যান্য অঞ্চল
থেকে এগিয়ে
ছিল।
বন্দরভিত্তিক কর্মকান্ড ছাড়াও ব্রিটিশ আমলে
আসাম বেঙ্গল
রেলওয়ের সদর
দপ্তর চট্টগ্রামে
স্থাপিত হয়। পাকিস্তান
আমলে এখানে
ইস্পাত, পাট,
বস্ত্র, সুতা,
তামাক, ম্যাচ
ও ঔষধ
শিল্পের কারখানা
গড়ে ওঠে। ১৯৬০
এর দশকে
শংখ ও
মাতামুহুর নদীর তীরবর্তী এলাকায় তামাক
চাষ শুরু
হয়।বাংলাদেশ টোব্যাকো
কোম্পানি, এখন যা ব্রিটিশ আমেরিকান
টোব্যাকো কোম্পানী,
রাঙ্গুনিয়াতে তামাক চাষের ব্যবস্থা করে
এবং পরে
লাভজনক হওয়ায়
চাষীরা তা
অব্যাহত রাখে।
১৯৮৮ সালে বাংলাদেশের প্রথম রপ্তানী
প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল বা
EPZ চিটাগাং এ স্থাপিত হয়।
অল্প কথায় চিটাগাং
এর ইতিহাসঃ
-১৫১৭ সাল থেকে
পর্তুগিজরা আসা শুরু করে।
-১৫৩৮ সালে শের
শাহ-র
সেনাপতি এ
অঞ্চল দখল
করে।
- ১৫৮১ সাল থেকে
১৬৬৬ সাল
পর্যন্ত আরাকান
রাজাদের অধীনে
ছিল।
- ১৬৬৬ সালে মোগলরা
দখল করে
নেয়।
- পলাশীর যুদ্ধে বাংলার
নবাব সিরাজউদ্দৌলার
পরাজয়ের পর
মীরজাফর ইংরেজদের
চট্টগ্রাম বন্দরের কর্তৃত্ব দিতে রাজী
হননি।
১৭৬১ সালে
মীর জাফরকে
অপসারণ করে
মীর কাশিম
বাংলার নবাব
হয়ে ইংরেজদের
হাতে চট্টগ্রাম হস্তান্তর করেন।
- চিটাগাং শহরের
মর্যাদা পায়
১৮৬৩ সালে।
- ১৯৪৭ সালে ভারত
বিভাগের ফলে
এ অঞ্চল
পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়।
- ১৯৭১ সালের ১৬
ডিসেম্বর পাকিস্তান
সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ করলেও বিজয়ের
একদিন পর চিটাগাং শহর শত্রুমুক্ত হয়।
Comments