বৈদ্যুতিক বাতি, ফোনোগ্রাফ এবং মুভিং পিকচার উদ্ভাবন করেছেন থমাস আলভা এডিসন। বিজ্ঞানকে একাই অনেকদুর এগিয়ে নিয়েছেন তিনি। তবে তার সবচেয়ে বড় গুন ছিল ব্যবসায়ী বুদ্ধির সাথে তার উদ্ভাবনের সংমিশ্রণ করা। তিনি বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম কোম্পানী জেনারেল ইলেকট্রিকের জনক। তিনি তার যুগের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী আবার সেরা ব্যবসায়ীও। এমন কম্বিনেশন খুব কম হয়। কিন্তু সেসময় বৈদ্যুতিক বাতি, ফোনোগ্রাফ, মুভিং পিকচার সহ যেসব বিষয় নিয়ে থমাস আলভা এডিসন কাজ করছিলেন, সেসব বিষয় নিয়ে অন্য বিজ্ঞানিরাও অনেকদুর এগিয়ে গিয়েছিলেন। এডিসন এসব উদ্ভাবন ও তার পেটেন্ট না করলে অন্য কেউ অল্প দিনের মধ্যেই তা উদ্ভাবন করে ফেলতেন। যেমন এডিসনের আলোর বাতির তত্ত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার অনেক আগেই জোসেফ সোয়ান নামে এক বিজ্ঞানী ইংল্যান্ডের এক শহরে আলোর বাতি স্থাপন করেছেন। এডিসন সুচারু ব্যবসায়ী হওয়াতে জোসেফ সোয়ানকে তার কোম্পানীর একজন অংশীদার করে নেন। এডিসন ব্যবসায়ী হিসেবে তার প্রভাব খাটিয়ে তার আবিষ্কার করা বৈদ্যুতিক বাতি ডিসি প্রযুক্তি দিয়ে অভিজাতদের অন্দর মহলে আর কর্পোরেট অফিসগুলোতে স্থাপন করেন। বিশ্ব অভিভুত হয় বৈদ্যুতিক আলোর বিস্ময়ে।
ধীরে ধীরে অভিজাতদের মহল থেকে বৈদ্যুতিক বাতি পৌঁছে যেতে লাগলো সাধারণ মানুষের বাসস্থানে। এডিসন একের পর এক পাওয়ার প্ল্যান্ট ডিজাইনের কাজ পেতে লাগলেন। তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানী জেনারেল ইলেকট্রিক আর্থিক ভাবে ফুলে ফেপে উঠতে লাগলো। কিন্তু একটা ছোট সমস্যা দেখা দিল। এডিসনের বিদ্যুৎ বেশিদূর শক্তি পাঠাতে পারে না। এডিসনের উদ্ভাবিত ডিসি প্রযুক্তি দ্বারা পাঠানো বিদ্যুত যখন তারের মধ্য দিয়ে যায়,তখন আস্তে আস্তে তার দম ফুরাতে থাকে; ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভাষায় যাকে বলা হয় লাইন লস। । দুই কিলোমিটার যেতে না যেতেই দম শেষ তাই পাওয়ার প্ল্যান্টের দুই কিলোমিটারের বাইরের বাড়ী ঘরে আর বিদ্যুত পৌঁছানো যাচ্ছে না।
সমাধান দিলেন নিকোলা টেসলা যাকে সবাই ম্যাড সাইন্টিস্ট হিসেবেই বেশী চিনতো তার খ্যাপাটে স্বভাবের জন্য। টেসলা উদ্ভাবন করেন এসি (অল্টারনেট কারেন্ট / তড়িৎ শক্তি) । এডিসনের ডিসি কারেন্টকেই প্রথমে মনে করা হচ্ছিলো বেশী মার্কেট ওরিয়েন্টেড। দক্ষ ব্যবসায়ী এডিসন তার সামাজিক অবস্থান ব্যবহার করে ডিসির পক্ষে জনসংযোগ করতে থাকেন। শুরুর দিকে টেসলার অল্টারনেট কারেন্টের কোন বাণিজ্যিক দিক পাওয়া যাচ্ছিলো না। কিন্তু লং রানে দেখা গেলো টেসলার উদ্ভাবিত অল্টারনেট কারেন্টই বেশী উপকারী। এটা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে অনেক দূরে পাঠানো যায়। রেল এয়ার ব্রেকের উদ্ধাবক জর্জ ওয়েস্টিংহাউজ টেসলার এই প্রযুক্তি কিনে নেন। টেসলার ত্বতাবধানে ওয়েস্টিংহাউজ এসি প্রযুক্তি ব্যবহার করে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের শক্তি কাজে লাগিয়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। গ্রিডের কর্মক্ষমতা নিশ্চিত করে অল্টারনেট কারেন্টই উচ্চতর প্রযুক্তি।
থমাস আলভা এডিসন যিনি নিকোলা টেসলাকে দমিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন বিভিন্ন নৈতিক এবং অনৈতিক উপায়ে, শেষে সেই নিকোলা টেসলার উদ্ভাবিত অল্টারনেট কারেন্ট দিয়েই তার (এডিসনের) বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলতে নিভতে লাগলো সারা বিশ্বে।
১৯০৯ সালে রেডিও আবিষ্কারের জন্য গুগিলমো মার্কোনি পদার্ত্থবিজ্ঞানে নোবেল পরস্কার পান। নোবেল কমিটি জানতে পারেনি রেডিও প্রযুক্তির নেপথ্যে টেসলার অবদান। ১৮৯৮ সালেই টেসলা বেতার তরঙ্গনির্ভর রিমোট কন্ট্রোলার তৈরি করেন এবং তা দিয়ে দূর থেকে একটি নৌকা চালান। বেশির ভাগ লোকই তার এই উদ্ভাবনকে ম্যাজিক বা টেলিপ্যাথি মনে করেছিল। টেসলা ২ সেপ্টেম্বর ১৮৯৭ যুক্তরাষ্ট্রের পেটেন্ট অফিসে পেটেন্ট করার আবেদন করেন। আর মার্কোনি করেন ১৯০০ সালের ১০ নভেম্বর। আজকের পৃথিবী গুগিলমো মার্কোনিকে চেনে, নিকোলা টেসলাকে নয়।
১৯১৭ সালে নিকোলা টেসলা মার্কিন নৌবাহিনীকে জানান যে বিদ্যুত্ততরঙ্গের মাধ্যমে সমুদ্রের মধ্যে সাবমেরিনের অবস্থান নির্ণয় করা যাবে। তখন মার্কিন নৌবাহিনীর গবেষণা প্রধান ছিলেন টমাস আলভা এডিসন। টেসলার সাথে তার ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থাকার কারনে ‘এটি কোনো কাজে লাগবে না’ বলে প্রস্তাবটি নাকচ করে দেন এডিসন এবং নৌবাহিনীর শীর্ষকর্মকর্তাদের বোঝান যে,যুদ্ধক্ষেত্রে এই রাডারের কোন প্র্যাকটিক্যাল এ্যাপ্লিকেশন নেই। এর তের বছর পর এমিলি গিয়ারডিউ একই রীতিতে রাডার উদ্ভাবন করে বিখ্যাত হন।
নিকোলা টেসলা বছরের পর বছর তারবিহীন শব্দ,শক্তি, প্রতিবিম্ব এবং চলন্ত ছবি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রেরণ করার উপায় বের করার চেষ্টা করেন এবং অনেক দূর এগিয়েও যান। এ অর্থে তাকে টেলিফোন,সেলফোন ও টেলিভিশনের তথা আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রকৃত জনক বলা চলে। দুর্ভাগ্যবশত টেসলার আবিষ্কার বিফলে যায় কারণ তার আর্থিক সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠান জে পি মরগান শেষ মুহূর্তে তাদের পৃষ্টপোষকতা উঠিয়ে নেয় এই আশঙ্কায় যে টেসলা তার আবিস্কার মানুষকে ‘ফ্রি এ্যনার্জি’ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করবেন। বলা হয় তিনি রিল্যায়াবল নন, উল্টো পাল্টা বকেন।
মার্কিন কর্পোরেশন গুলোর অনৈতিক মুনাফা বন্ধ হয়ে যেত যদি নিকোলা টেসলা তার উদ্ভাবন গুলো সম্পন্ন করতে পারতেন। আপারময় জনগণের জন্য সহজ হয়ে যেত অনেক কিছু। কিন্তু নিয়মিত নার্ভাস ব্রেকডাউন,মধ্যরাতের স্বপ্নে উল্টোপাল্টা জিনিস দেখে সকালে তার বৈজ্ঞানিক থিওরি দেয়া,পাখিদের সাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলা এবং মঙ্গল থেকে তড়িচ্চুম্বক তরঙ্গ ধরার কথা ঘোষণা দিতে দিতে সবার কাছে তিনি হয়ে যান দ্যা ম্যাড সাইন্টিস্ট। তাকে সমাজের চোখে আরও হেয় করবার জন্য সুপার ম্যান সিরিজে ম্যাড সাইন্টিস্ট ক্যারেক্টার নির্মাণ করা হয় তার উপর ভিত্তি করে। সুপার ম্যান হিরো আর নিকোলা টেসলা ভিলেন। সেই থেকে পপুলার কালচারেও তিনি ভিলেন।
নিকোলা টেসলা চেয়েছিলেন এনার্জি / শক্তি যেন পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষ বিনা মূল্যে পায়। তার যুক্তি ছিল যে তথ্য যদি তার ছাড়াই দূর দূরান্তে পাঠানো যায়,তবে এনার্জিও যাবে। টেসলা তার এই আবিস্কার সম্পূর্ণ করতে পারলে আজ ইলেক্ট্রিসিটির জন্য পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষের দরকার হত শুধু একটি অ্যান্টেনা। তার মারা যাবার পর আমেরিকান সরকার, শীর্ষ কর্পোরেশন গুলোর প্ররোচনায় সেই গবেষণার ল্যাব নোটস,প্যাটেন্টের দলিল,ব্যাক্তিগত ডায়রি গায়েব করে দেয় এ অজুহাতে যে এসব ভুল কারো হাতে গেলে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হতে পারে।
থমাস এডিসন হলেন হেনরি ফোর্ড,বিল গেটস আর স্টিভ জবের মতন – উদ্ভাবক, বিশ্লেষক এবং দক্ষ ব্যবসায়ী। তিনি প্রচুর সম্মান,সমৃদ্ধি এবং খ্যাতি নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আর খামখেয়ালী ম্যাড সাইন্টিস্ট নিকোলা টেসলা ১৯৪৩ সালের ৭ জানুয়ারী মারা যান হতদরিদ্র হয়ে নিউ ইয়র্কের এক হোটেল রুমে। তার অগোছালো ও খামখেয়ালীপনার কারনে তার অধিকাংশ উদ্ভাবনগুলো ইতিহাসের পাতায় হারিয়ে যেতে থাকে।
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট টেসলার রেডিও আবিষ্কারের স্বীকৃতি দেয় তার মারা যাবার কয়েক মাস পরে।
ধীরে ধীরে অভিজাতদের মহল থেকে বৈদ্যুতিক বাতি পৌঁছে যেতে লাগলো সাধারণ মানুষের বাসস্থানে। এডিসন একের পর এক পাওয়ার প্ল্যান্ট ডিজাইনের কাজ পেতে লাগলেন। তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানী জেনারেল ইলেকট্রিক আর্থিক ভাবে ফুলে ফেপে উঠতে লাগলো। কিন্তু একটা ছোট সমস্যা দেখা দিল। এডিসনের বিদ্যুৎ বেশিদূর শক্তি পাঠাতে পারে না। এডিসনের উদ্ভাবিত ডিসি প্রযুক্তি দ্বারা পাঠানো বিদ্যুত যখন তারের মধ্য দিয়ে যায়,তখন আস্তে আস্তে তার দম ফুরাতে থাকে; ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভাষায় যাকে বলা হয় লাইন লস। । দুই কিলোমিটার যেতে না যেতেই দম শেষ তাই পাওয়ার প্ল্যান্টের দুই কিলোমিটারের বাইরের বাড়ী ঘরে আর বিদ্যুত পৌঁছানো যাচ্ছে না।
সমাধান দিলেন নিকোলা টেসলা যাকে সবাই ম্যাড সাইন্টিস্ট হিসেবেই বেশী চিনতো তার খ্যাপাটে স্বভাবের জন্য। টেসলা উদ্ভাবন করেন এসি (অল্টারনেট কারেন্ট / তড়িৎ শক্তি) । এডিসনের ডিসি কারেন্টকেই প্রথমে মনে করা হচ্ছিলো বেশী মার্কেট ওরিয়েন্টেড। দক্ষ ব্যবসায়ী এডিসন তার সামাজিক অবস্থান ব্যবহার করে ডিসির পক্ষে জনসংযোগ করতে থাকেন। শুরুর দিকে টেসলার অল্টারনেট কারেন্টের কোন বাণিজ্যিক দিক পাওয়া যাচ্ছিলো না। কিন্তু লং রানে দেখা গেলো টেসলার উদ্ভাবিত অল্টারনেট কারেন্টই বেশী উপকারী। এটা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে অনেক দূরে পাঠানো যায়। রেল এয়ার ব্রেকের উদ্ধাবক জর্জ ওয়েস্টিংহাউজ টেসলার এই প্রযুক্তি কিনে নেন। টেসলার ত্বতাবধানে ওয়েস্টিংহাউজ এসি প্রযুক্তি ব্যবহার করে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের শক্তি কাজে লাগিয়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। গ্রিডের কর্মক্ষমতা নিশ্চিত করে অল্টারনেট কারেন্টই উচ্চতর প্রযুক্তি।
থমাস আলভা এডিসন যিনি নিকোলা টেসলাকে দমিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন বিভিন্ন নৈতিক এবং অনৈতিক উপায়ে, শেষে সেই নিকোলা টেসলার উদ্ভাবিত অল্টারনেট কারেন্ট দিয়েই তার (এডিসনের) বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলতে নিভতে লাগলো সারা বিশ্বে।
১৯০৯ সালে রেডিও আবিষ্কারের জন্য গুগিলমো মার্কোনি পদার্ত্থবিজ্ঞানে নোবেল পরস্কার পান। নোবেল কমিটি জানতে পারেনি রেডিও প্রযুক্তির নেপথ্যে টেসলার অবদান। ১৮৯৮ সালেই টেসলা বেতার তরঙ্গনির্ভর রিমোট কন্ট্রোলার তৈরি করেন এবং তা দিয়ে দূর থেকে একটি নৌকা চালান। বেশির ভাগ লোকই তার এই উদ্ভাবনকে ম্যাজিক বা টেলিপ্যাথি মনে করেছিল। টেসলা ২ সেপ্টেম্বর ১৮৯৭ যুক্তরাষ্ট্রের পেটেন্ট অফিসে পেটেন্ট করার আবেদন করেন। আর মার্কোনি করেন ১৯০০ সালের ১০ নভেম্বর। আজকের পৃথিবী গুগিলমো মার্কোনিকে চেনে, নিকোলা টেসলাকে নয়।
১৯১৭ সালে নিকোলা টেসলা মার্কিন নৌবাহিনীকে জানান যে বিদ্যুত্ততরঙ্গের মাধ্যমে সমুদ্রের মধ্যে সাবমেরিনের অবস্থান নির্ণয় করা যাবে। তখন মার্কিন নৌবাহিনীর গবেষণা প্রধান ছিলেন টমাস আলভা এডিসন। টেসলার সাথে তার ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থাকার কারনে ‘এটি কোনো কাজে লাগবে না’ বলে প্রস্তাবটি নাকচ করে দেন এডিসন এবং নৌবাহিনীর শীর্ষকর্মকর্তাদের বোঝান যে,যুদ্ধক্ষেত্রে এই রাডারের কোন প্র্যাকটিক্যাল এ্যাপ্লিকেশন নেই। এর তের বছর পর এমিলি গিয়ারডিউ একই রীতিতে রাডার উদ্ভাবন করে বিখ্যাত হন।
নিকোলা টেসলা বছরের পর বছর তারবিহীন শব্দ,শক্তি, প্রতিবিম্ব এবং চলন্ত ছবি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রেরণ করার উপায় বের করার চেষ্টা করেন এবং অনেক দূর এগিয়েও যান। এ অর্থে তাকে টেলিফোন,সেলফোন ও টেলিভিশনের তথা আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রকৃত জনক বলা চলে। দুর্ভাগ্যবশত টেসলার আবিষ্কার বিফলে যায় কারণ তার আর্থিক সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠান জে পি মরগান শেষ মুহূর্তে তাদের পৃষ্টপোষকতা উঠিয়ে নেয় এই আশঙ্কায় যে টেসলা তার আবিস্কার মানুষকে ‘ফ্রি এ্যনার্জি’ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করবেন। বলা হয় তিনি রিল্যায়াবল নন, উল্টো পাল্টা বকেন।
মার্কিন কর্পোরেশন গুলোর অনৈতিক মুনাফা বন্ধ হয়ে যেত যদি নিকোলা টেসলা তার উদ্ভাবন গুলো সম্পন্ন করতে পারতেন। আপারময় জনগণের জন্য সহজ হয়ে যেত অনেক কিছু। কিন্তু নিয়মিত নার্ভাস ব্রেকডাউন,মধ্যরাতের স্বপ্নে উল্টোপাল্টা জিনিস দেখে সকালে তার বৈজ্ঞানিক থিওরি দেয়া,পাখিদের সাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলা এবং মঙ্গল থেকে তড়িচ্চুম্বক তরঙ্গ ধরার কথা ঘোষণা দিতে দিতে সবার কাছে তিনি হয়ে যান দ্যা ম্যাড সাইন্টিস্ট। তাকে সমাজের চোখে আরও হেয় করবার জন্য সুপার ম্যান সিরিজে ম্যাড সাইন্টিস্ট ক্যারেক্টার নির্মাণ করা হয় তার উপর ভিত্তি করে। সুপার ম্যান হিরো আর নিকোলা টেসলা ভিলেন। সেই থেকে পপুলার কালচারেও তিনি ভিলেন।
নিকোলা টেসলা চেয়েছিলেন এনার্জি / শক্তি যেন পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষ বিনা মূল্যে পায়। তার যুক্তি ছিল যে তথ্য যদি তার ছাড়াই দূর দূরান্তে পাঠানো যায়,তবে এনার্জিও যাবে। টেসলা তার এই আবিস্কার সম্পূর্ণ করতে পারলে আজ ইলেক্ট্রিসিটির জন্য পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষের দরকার হত শুধু একটি অ্যান্টেনা। তার মারা যাবার পর আমেরিকান সরকার, শীর্ষ কর্পোরেশন গুলোর প্ররোচনায় সেই গবেষণার ল্যাব নোটস,প্যাটেন্টের দলিল,ব্যাক্তিগত ডায়রি গায়েব করে দেয় এ অজুহাতে যে এসব ভুল কারো হাতে গেলে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হতে পারে।
থমাস এডিসন হলেন হেনরি ফোর্ড,বিল গেটস আর স্টিভ জবের মতন – উদ্ভাবক, বিশ্লেষক এবং দক্ষ ব্যবসায়ী। তিনি প্রচুর সম্মান,সমৃদ্ধি এবং খ্যাতি নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আর খামখেয়ালী ম্যাড সাইন্টিস্ট নিকোলা টেসলা ১৯৪৩ সালের ৭ জানুয়ারী মারা যান হতদরিদ্র হয়ে নিউ ইয়র্কের এক হোটেল রুমে। তার অগোছালো ও খামখেয়ালীপনার কারনে তার অধিকাংশ উদ্ভাবনগুলো ইতিহাসের পাতায় হারিয়ে যেতে থাকে।
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট টেসলার রেডিও আবিষ্কারের স্বীকৃতি দেয় তার মারা যাবার কয়েক মাস পরে।
Comments