থমাস আলভা এডিসন ছিলেন লাইট বাল্বের উদ্ভাবক। তিনি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম
কোম্পানী জেনারেল ইলেকট্রিকের জনক। তাই তিনি জুড়ে আছেন আমাদের বিজ্ঞান বইয়ে, জ্ঞান
প্রতিযোগিতার প্রশ্নে আর টিভির বিজ্ঞাপনে। কিন্তু থমাস আলভা এডিসনের এই লাইট বাল্ব
জ্বলে নিভে নিকোলা টেসলার উদ্ভাবিত এসি প্রযুক্তি দিয়ে। এডিসনের উদ্ভাবিত ডিসি
পদ্ধতি মার খায় নিকোলা টেসলার এসি প্রযুক্তির কাছে।
১৯০৯ সালে রেডিও আবিষ্কারের
জন্য গুগিলমো মার্কোনি পদার্ত্থবিজ্ঞানে নোবেল পরস্কার পান। নোবেল কমিটি জানতে
পারেনি রেডিও প্রযুক্তির নেপথ্যে নিকোলা টেসলার অবদান। ১৮৯৮ সালেই টেসলা বেতার
তরঙ্গনির্ভর রিমোট কন্ট্রোলার তৈরি করেন এবং তা দিয়ে দূর থেকে একটি নৌকা চালান।
বেশির ভাগ লোকই তার এই উদ্ভাবনকে ম্যাজিক বা টেলিপ্যাথি মনে করেছিল। টেসলা ২
সেপ্টেম্বর ১৮৯৭ যুক্তরাষ্ট্রের পেটেন্ট অফিসে “System of Transmitting
Electrical Energy” এবং “Electrical Transmitter” পেটেন্ট করার আবেদন করেন। আর মার্কোনি করেন ১৯০০ সালের
১০ নভেম্বর। পরে টেসলা কোর্টে যান তার রেডিও আবিষ্কারের স্বীকৃতির জন্য। আমেরিকার
সুপ্রিম কোর্ট টেসলার আবিষ্কারের স্বীকৃতি দেয় তার মারা যাবার কয়েক মাস পর।
১৯১৭
সালে নিকোলা টেসলা দাবী করেন বিদ্যুত্ততরঙ্গের মাধ্যমে সমুদ্রের মধ্যে সাবমেরিনের
অবস্থান নির্ণয় করা যাবে। তখন মার্কিন নৌবাহিনীর গবেষণা প্রধান ছিলেন টমাস আলভা
এডিসন। টেসলার সাথে তার ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থাকার কারনে ‘এটি কোনো কাজে
লাগবে না’ বলে প্রস্তাবটি নাকচ করে দেন এডিসন এবং নৌবাহিনীর
শীর্ষকর্মকর্তাদের বোঝান যে, যুদ্ধক্ষেত্রে এই রাডারের কোন প্র্যাকটিক্যাল
এ্যাপ্লিকেশন নেই। এর তের বছর পর এমিলি গিয়ারডিউ একই রীতিতে রাডার উদ্ভাবন করেন।
১৯২৮ সালে টেসলা একটা পেটেন্টটি করেন এমন এক বাহনের যা খাড়াভাবে উড্ডয়ন করতে পারত।
এই উদ্ভাবন ছিল হেলিকপ্টারের প্রথম ধারণা।
নিকোলা টেসলার এডিসন, মার্কোনি, গিয়ারডিউ হয়ে উঠা
হয়নি। তিনি রয়ে গেছেন খ্যাপাটে বিজ্ঞানী হিসেবে। একবার আইন্সটাইন কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো “পৃথিবীর সব থেকে বুদ্ধিমান
ব্যক্তি হতে কেমন লাগে?” আইন্সটাইন উত্তরে বলেছিল “আমি তো জানি না, এর উত্তর জানার জন্য নিকোলা টেসলাকে
প্রশ্নটা করতে হবে।”
Comments