এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে গেলো অর্ধদশকে বাংলাদেশের স্থলবন্দরগুলো বেশ উন্নতি করেছে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী
পরিকল্পনার অভাবে স্থলবন্দরগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঠিকমত হচ্ছে না। ফলে এগুলো থেকে পাওয়া
যাচ্ছে না প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধাও। দক্ষিণ দিক ছাড়া চারদিক স্থল বেষ্টিত হওয়ায় বাংলাদেশকে তার পার্শ্ববর্তী
দেশের উপর বেশি নির্ভর করতে হয়। আঞ্চলিক বাণিজ্যিক দ্রব্যাদিগুলো কম খরচে এবং সহজে স্থল পথ দিয়ে
আনা নেয়া করা যায়। আর সেটার জন্য আমাদেরকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের উপর নির্ভর
করতে হয়।
কিছু কিছু স্থল বন্দর আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্যের উন্নতি এবং সরকারের
রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও বন্দরগুলো তাদের যথার্থ গুরুত্ব পাচ্ছে
না। এটা সত্য যে বড় মাত্রায় পণ্য আনা নেয়ার
ক্ষেত্রে সবগুলো স্থল বন্দরই উপযুক্ত নয় এবং গুরুত্বপূর্ণও নয়। কিন্তু উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের
মাধ্যমে এগুলোর সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা যায়। এমন একটি স্থলবন্দরের
নাম বুড়িমারা স্থলবন্দর। উন্নয়ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে এটার সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করার পর
গেল সাড়ে তিন বছরে স্থল বন্দরটি সরকারের রাজস্ব খাতে ১৩০ মিলিয়ন টাকা জমা করেছে। অবস্থানগত এবং ভৌগোলিক
কারণে বন্দরটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটার মাধ্যমে ভারত, নেপাল এবং ভুটানের সাথে বানিজ্য বাড়ানোর ক্ষেত্রে
সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এটা হয়ে উঠতে পারে এ অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থল বন্দর।
বাংলাবন্দ নামের স্থলবন্দরটিকেও বেশ সম্ভাবনাময় মনে হচ্ছে। তবে সেই সম্ভবনাকে
বাস্তবে রুপ দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হাতে নিতে হবে। বর্তমানে দেশে স্থলবন্দরের
সংখ্যা ১৪টি। তার মধ্যে সবচেয়ে ব্যস্ততম বন্দরের নাম হচ্ছে বেনাপোল। এটা দিয়ে আন্তঃবানিজ্যের
৭০ শতাংশ ট্রাক, কারগো এবং পণ্য-দ্রব্যাদি আনা নেয়া করা হয়। বাংলাদেশ অংশে কিছু
সমস্যা থাকা সত্ত্বেও ভারতের অংশে বেশ উন্নয়ন কাজ হচ্ছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরটি দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত এবং বঞ্চিত অবস্থায়
পড়ে ছিল। কিন্তু বর্তমানে এটা
বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। কারণ ভারতের ত্রিপুরা থেকে আমদানির ক্ষেত্রে এটা সবচেয়ে সহজ
পথ।
যাই হোক, বেনাপোল ছাড়া বাংলাদেশের অন্যান্য স্থলবন্দরগুলোর সমস্যা কমবেশি
একই রকম। ভারী যানবাহনের জন্য উপযুক্ত রাস্তার অভাব, পণ্য প্যাকেচজাতকরণের সুযোগ সুবিধার অভাব,
পণ্য ওঠা-নামার করার
জন্য অযথযথ জায়গা, ওজন ব্রিজের অভাব এবং আরো অনেক সমস্যায় জর্জরিত স্থল বন্দরগুলো। এখানে যে কেবল সুযোগ
সুবিধার অভাব তেমনটি কিন্তু নয়। এর সাথে জড়িয়ে আছে আরো নানান সমস্যা। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য
হল অধিকাংশ স্থলবন্দরই একটিমাত্র কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। বেনাপোল বন্দর বাদে
বাদবাকি বন্দরগুলোর উন্নয়ন কাজ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের নির্মাণ-পরিচালনা এবং
হস্তান্তর পদ্ধতির গ্যাড়াকলে পড়ে আছে।
আর একটি সমস্যা হচ্ছে বিভিন্ন বিষয়গুলো দেখার পরও প্রশাষন তা এড়িয়ে যায়। বন্দরগুলোর উন্নয়ন
কাজ করতে পারলে দ্বিপাক্ষিক বানিজ্যের ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ। কারণ স্থল বন্দরগুলোর
ভারতের অংশটি বেশ উন্নত। এছাড়া ভারত এবং বাংলাদেশ উভয় অংশে কাস্টম অফিসার, অভিবাসন অফিসার থেকে
শুরু করে সবকিছুই বেশ ভালো। কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিক দিয়ে আমরা পিছিয়ে। কেবল বাংলাদেশ অংশে অবকাঠামোগত উন্নয়নই স্থলবন্দরগুলোকে
সচল করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে ভারতকেও। কারণ উভয় দেশের স্বার্থের
কথা চিন্তা করে উভয় অংশের দিকেই নজর রাখতে হবে। গড়ে তুলতে হবে পারস্পারিক
উন্নয়ন ব্যবস্থা।
Relevant articles:
Bangladesh and Bhutan need to establish a connection for easier cooperation. Good news is that they plan to seal a treaty on bilateral transit.
Bangladesh's local products of leather and shrimp products are expanding sharply. Most barriers to business and investment has been eliminated. And the government offers incomparable facilities to investors at the moment.
Comments